গত সোমবার গভীর রাতে রামদিয়া সরকারি খাদ্য গুদামে এ ঘটনা ঘটেছে।
এই ঘটনায় এই খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম হাওলাদার বুধবার কাশিয়ানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
এছাড়া মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে তিনি মৌখিক অভিযোগও করেছেন।
অভিযোগ ওঠার পর ওই গুদামের নিরাপত্তা প্রহরী মশিউর রহমান মিথুনকে বদলি করা হয়েছে।
তবে কাশিয়ানী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান খাজা নেওয়াজ তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
অভিযোগের বরাত দিয়ে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম হাওলাদার বলেন, খাদ্যগুদামে সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান চলছে। কৃষি কার্ডধারী কৃষকের কাছ থেকে প্রায় চারশ মেট্রিক টন ধান কিনেছেন খাদ্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর।
“খাদ্য গুদামের নিরাপত্তা প্রহরী ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান খাজা নেওয়াজের ভাতিজা মশিউর রহমান মিথুন গুদামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নানা অভিযোগ তুলে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে দূর্ব্যবহার ব্যবহার করে আসছিলেন বলে জিডিতে অভিযোগ করা হয়।”
জিডির বরাত ওসি আরও বলেন, সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মশিউর ৭/৮ জন বহিরাগত লোক নিয়ে খাদ্য গুদামে ঢুকে ধান সংগ্রহের বিষয় তুলে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে কথা কাটাকাটি করেন।
ওসি জানান, এরপর রাত ১১টার দিকে নিরাপত্তা প্রহরীর সহায়তায় ভাইস চেয়ারম্যান খাজা নেওয়াজ পাঁচ জন লোক নিয়ে খাদ্য গুদামে প্রবেশ করেন বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়।
“জিডিতে জাহাঙ্গীর বলেন-আমাকে ও আমার অফিস সহকারী দেলোয়ার হোসেনকে মোবাইলে ফোন করে ঘুম থেকে তুলে অফিসে নিয়ে যান খাজা নেওয়াজ। আমাকে চেয়ারে বসিয়ে সবাই চারপাশে দাঁড়িয়ে ও বসে থাকেন।”
এক পর্যায় ভাইস চেয়ারম্যান খাজা নেওয়াজ গুদামে ধান সরবরাহের জন্য জাহাঙ্গীরের কাছে দুইশ খালি বস্তা চান বলে জিডিতে বলা হয়, বলেন ওসি।
ওসি আরও বলেন, ওই সময় জাহাঙ্গীর কৃষি কার্ডের মাধ্যমে ধান কেনা হচ্ছে বলে জানালে খাজা নেওয়াজ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এই সময় খাজা নেওয়াজের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একজন কোমর থেকে পিস্তল বের করে জাহাঙ্গীরকে হত্যার হুমকি দেন।
“আমাদের কথা না শুনলে তোকে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দেব। তোর মতো দুচারটা ফেলে দিলে কিছুই হবে না।”
এ ব্যাপারে কাশিয়ানী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান খাজা নেওয়াজ বলেন, “অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। ওই গুদামে কী ঘটনা ঘটেছে তা আমার জানা নেই। তবে গুদামের নিরাপত্তা প্রহরীর সাথে ওই কর্মকর্তার বিরোধ রয়েছে। এটিকে কেন্দ্র করে কোনো ঘটনা ঘটলেও ঘটতে পারে।”
ওই রাতে তিনি খাদ্য গুদামে যাননি দাবি করে বলেন, “স্থানীয় কিছু লোক সিন্ডিকেট করে খাদ্য গুদামে ধান দিচ্ছিল। এ বিষয়ে কৃষকরা অভিযোগ করলে আমি এ অনিয়মের প্রতিবাদ করেছি মাত্র। আমি সেখানে কখনোই ধান দিতে যাইনি।”
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ বলেন, “খাদ্য কর্মকর্তা আমার অফিসে এসে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ঘটনার সাথে জড়িত নিরাপত্তা প্রহরী মশিউর রহমানকে বদলির জন্য ফোনে বলা হলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তাকে তাক্ষণিকভাবে বদলি করেন।”
খাদ্য কর্মকর্তা আইনি সহায়তা চাইলে তাকে সহায়তা করা হবে বলে ইউএনও জানান।
গোপালগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শেফাউর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।