সোমবার গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর আঞ্চলিক সড়কের গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটামোড় এলাকায় প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল পল্লী মাদারপুর ও জয়পুরপাড়া গ্রাম থেকে ব্যানার, ফেস্টুন ও লাল পতাকা হাতে নিয়ে হাজারো নারী-পুরুষ বিক্ষোভ মিছিল করে এ মানববন্ধনে অংশ নেন।
২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষে গুলিতে তিনজন সাঁওতাল মারা যান।
ওই রাতে ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে সাঁওতালদের উচ্ছেদ করা হয়। এ নিয়ে সে বছরের ২৬ নভেম্বর থোমাস হেমরম বাদী হয়ে মামলা করেন।
এ কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, সাঁওতাল হত্যার চার বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তদন্তের নামে প্রশাসন কালক্ষেপণ করছে। সরকারের দেওয়া বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি আজও বাস্তবায়ন হয়নি।
এতে সভাপতিত্ব করেন সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ডা. ফিলিমন বাস্ক।
সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি পুনরুদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, আদিবাসী বাঙালী সংহতি পরিষদ ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি আয়োজিত এ মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, উপজেলা সিপিবির সভাপতি তাজুল ইসলাম, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ সভাপতি রবিন্দ্রনাথ সরেণ, সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাফুরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন শেখ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সুফল হেমব্রম, কোষাধ্যক্ষ গণেশ মুরমু, যুব ইউনিয়ন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান ও অন্যরা।
১৯৬২ সালে আখ চাষের জন্য গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ-বাগদা এলাকায় এক হাজার ৮৪২ একর জমি অধিগ্রহণ করে রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ। কয়েক বছর আগে ওই জমি লিজ দিলে সেখানে ধান, পাট, তামাকসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ করা হয়। ৫ বছর অধিগ্রহণের চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ এনে এসব জমি ফেরতের দাবিতে আন্দোলনে নামে সাঁওতালরা। ২০১৬ সালের ১ জুলাই এ খামারের প্রায় ১০০ একর জমিতে ঘর নির্মাণ করে বসবাস ও ধান, পাট এবং মাসকালাই চাষ শুরু করে। বাকি জমিতে চিনিকল কর্তৃপক্ষ আখ রোপন করে। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে তাদের সেখান থেকে উচ্ছেদ করা হয়।
মানববন্ধন শেষে তারা গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর আঞ্চলিক সড়কের উপজেলার ইক্ষুখামার এলাকায়ও বিক্ষোভ করে।