গোপালগঞ্জে মহাসড়কে অবৈধ বালু উচ্ছেদ শুরু

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কালনা-ভাটিয়াপাড়ায় ঢাকা-বেনাপোল মহাসড়কে অবৈধভাবে রাখা বালু উচ্ছেদ শুরু করেছে প্রশাসন।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 July 2020, 05:35 PM
Updated : 19 July 2020, 05:35 PM

রোববার কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বিার আহমেদের ভ্রাম্যমাণ আদালত এই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে।

এ সময় গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-নির্বাহী প্রকৌশলী সাকিরুল ইসলামও ছিলেন।

মহাসড়কের সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বালু রেখেছে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা। বহু বালু বোঝাই ট্রাক চলাচলের কারণে সড়কটি ভেঙে দেবে গেছে। এতে সড়কে ছোটো-বড়ো অনেক গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। পানি-মাটি মিলে কাদায় সড়কটি যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। যানবাহন চলাচলে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হয়।

ওই সড়ক দিয়ে পেনাপোল, যশোর, নড়াইল, খুলনাসহ ১০ জেলায় চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রী সাধারণের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

রোববার সড়ক বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানে অন্তত ১০টি বালুর চাতাল অপসারণ করেছে।

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে ঢাকা-বেনাপোল মহাসড়কে বালু উত্তোলনের পাইপ ভেঙে দিচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের লেকাজন

গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) কার্যালয় থেকে জানা গেছে, কালনা-ভাটিয়াপাড়া এলাকায় সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়কে ২০১০ সালে সর্বশেষ কাজ করা হয়। প্রতি বছর সড়ক ও জনপথ বিভাগ অত্যন্ত ব্যস্ত এই সড়ক সংস্কারের কাজ করে। কিন্তু অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা সড়কটির দুপাশে বালু রাখার কারণে টিকিয়ে রাখা যাচ্ছিল না।

স্থানীয় কাশিয়ানী উপজেলার বুধপাশা গ্রামের হাবিব শেখ (৫২), নড়াইলের লোহগড়ার মল্লিকপুর গ্রামের অলিয়ার মোল্লা (৪৮) বলেন,  ভাটিয়াপাড়া মোড় থেকে কালনা ঘাট পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে বড় চাতাল করে মোটা পাইপের সাহায্যে বালু  মজুদ করে বালূ ‘ব্যবসায়ীরা’। পাইপ দিয়ে তীব্র গতিতে পানি বের হওয়ার কারণে রাস্তার মাটি ভেঙে যায়। এভাবে গড়া রাস্তার দুপাশের বালুর পাহাড় থেকে তাদের লোকজন ‘এক্সকেভেটর’ দিয়ে ট্রাকে বালু ভর্তি করে। 

হাবিব শেখ বলেন, রাস্তার দুপাশে চাতালগুলোতে বালুর স্তর সড়ক থেকে অনেক উঁচু। ওইসব চাতাল থেকে বালুর পানি রাস্তায় এসে জমা হয়। ওই পানির কারণে রাস্তায় ভাঙন ধরে; রাস্তা ডেবে যায়।

“জঙ্গল মুকুন্দপুরের আধা কিলোমিটার সড়ক বেহাল হয়েছে। এখানে ঝুঁকি নিয়ে হেলেদুলে চলছে যানবাহন। চলতে গিয়ে বিকল হযে পড়ে অনেক যানবাহন। কখনও কখনও ঘটছে দূর্ঘটনা। সড়ক বিভাগ থেকে কিছু বালু ও ইটের খোয়া ফেলে বেশ কয়েকবার খানাখন্দ ঠিক করে। কিন্তু দুয়েকদিন পর একই অবস্থার সৃষ্টি হয়।”

বালু জমা করায় গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর কালনা-ভাটিয়াপাড়ায় ঢাকা-বেনাপোল মহাসড়কের দশা

কাশিযানীর জঙ্গল মুকন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা রনজু শেখ বলেন, “এ সড়কে চলাচল করতে আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। বৃষ্টি হলে সড়কটি কাদা ও পানিতে একাকার হয়ে যায়। চলচল করা যায় না। রোদ হলে বাতাসে বালু ওড়ে। আমরা এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চাই।”

উচ্ছেদে অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে তিনি অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি জানান।  

গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথের উপ-নির্বাহী প্রকৌশলী সাকিরুল ইসলাম বলেন, “এ সড়কটির ভাটিয়াপাড়া-কালনা অংশে প্রায় একশ বালুর চাতাল আছে। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ১০টি বালুর চাতাল সড়ক থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। দুয়েকদিন পর আবার এ অভিযান চালানো হবে। এ উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ বলেন, “এ সড়কটি দীর্ঘদিন যাবত সাধারণ মানুষের জন্য মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। কিছু কিছু বালুর ‘ব্যবসায়ী’ এই সড়কটি বেহাল করেছে। তাই আমরা এখানে বালুর চাতাল উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছি।”

এই কাজে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।