সুনামগঞ্জে বন্যায় সড়কের ব্যাপক ভাঙন

দু’দফা বন্যায় সড়ক ভেঙে সুনামগঞ্জ শহরের সঙ্গে চারটি উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে জেলাবাসী।

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিমাহমুদুর রহমান তারেক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 July 2020, 03:21 PM
Updated : 16 July 2020, 03:45 PM

বিবরণ দিয়ে সুনামগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব আলম জানান, সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কের শক্তিয়ারখোলা-আনোয়ারপুর নামক স্থানে ভেঙে যাওয়ায় তাহিরপুর উপজেলার সঙ্গে জেলা শহরের সড়ক যোগযোগ বিচ্ছিন্ন। সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্বর সড়কের রাধানগর ও লালপুর এলাকায় ভেঙে যাওয়ায় বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা সঙ্গে জেলা শহরের সড়ক যোগযোগ বিচ্ছিন্ন। সুনামগঞ্জ-জামালগঞ্জ সড়কের জাল্লাবাজ এলাকায় ভেঙে গিয়ে জামালগঞ্জ উপজেলা বিচ্ছিন্ন আছে। সুনামগঞ্জ-ছাতক সড়কের নোয়াগাঁও ও দোহালিয়া এলাকায় ভাঙনের ফলে জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

“আমাদের মোট সড়ক ৪ হাজার ৬৯৫ কিলোমিটারের মধ্যে ৬৫০ কিলোমিটার ভেঙে গেছে। টাকার অংকে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩৮০ কোটি টাকা।

“অনেক জায়গা পানি এখনও নামেনি। পানি নামলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে। ক্ষতিক্ষতির পুরো হিসাব পাওয়ার পর আমরা মন্ত্রণালয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো মেরামতের জন্য প্রস্তাব পাঠাব।”

তিনি জানান, জুন ও জুলাই মাসের দু’দফা বন্যায় সুনামগঞ্জের সড়ক যোগাযোগের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানিতে জেলার সবকটি উপজেলার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২২টি মূল সংযোগ সড়ক পুরোপুরি ভেঙে গেছে।

সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুর ইসলাম বলেন, “আমাদের ২২৬ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ৩০ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তাদের সড়কের ক্ষতি মেরামতে প্রায় ২৮ কোটি টাকা লাগবে। তবে বন্যার পানি নামার পরই পুরো ক্ষতির হিসাব পাওয়া যাবে বলেন তিনি।

সুনামগঞ্জ যাত্রী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান বলেন, বন্যার পর মানুষজন সব চেয়ে ভোগান্তিতে পড়বে ভাঙাচোরা সড়কের কারণে। জেলার সঙ্গে চারটি উপজেলার উপজেলার সড়ক যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। বর্ষামৌসুম হওয়ায় সাধারণ মানুষকে নৌকায় চলাচল করতে হচ্ছে। দ্রুত সড়কগুলো মেরামত করা না হলে ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছাবে।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা ফতেপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রনজিত চৌধুরী রাজন বলেন,  জেলা শহর থেকে আমার ইউনিয়নের আবুয়া নদী পর্যন্ত সড়কটি এমনিতেই খানাখন্দে ভরা ছিল। দুই দফা বন্যায় সড়কের অনেক স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় লোকজনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

জামালগঞ্জ উপজেলার আকবর হোসেন বলেন, আমরা জেলা শহর থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছি। নৌকায় পার হয়ে জেলা শহরে যেতে হচ্ছে। জেলা শহরে যেতে এক ঘণ্টার জায়গায় তিন ঘণ্টা লাগছে।