বরগুনা হাসপাতালে সাধারণের টাকায় অক্সিজেন মেশিন

সাধারণ মানুষের চাঁদার টাকায় বরগুনা সদর হাসপাতালে চারটি হাইফ্লো ন্যাজাল কেনুলা মেশিন চালু করা হয়েছে।

মনির হোসেন কামাল বরগুনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 July 2020, 12:39 PM
Updated : 16 July 2020, 12:39 PM

বৃহস্পতিবার এই চারটি মেশিন চালু করা হয় বলে বরগুনার সিভিল সার্জন হুমায়ুন শাহিন খান জানিয়েছেন।

তিনি জানান, গত ৪ জুলাই বরগুনার সাধারণ নাগরিকদের টাকায় কেনা প্রথম মেশিনটি সদর হাসপাতালে স্থাপন করা হয়। বুধবার একটি মেশিন বরগুনা পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার সকালে আরও দুইটি মেশিন হস্তান্তর করা হয়।

এর মধ্যে একটি মেশিন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মশিউর রহমান সিহাবের দেওয়া বলে জানান সিভিল সার্জন।

যেভাবে টাকা সংগ্রহ করা হয়

‘আমাদের জন্য আমরা’ শিরোনামে সাংবাদিক মুশফিক আরিফের ফেইসবুকে নেবুলা মেশিন কেনার জন্য একটি পোস্ট দেওয়া হয়েছিল। পরে বরগুনার লোকবেতারে এ ব্যাপারে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়।

সাংবাদিক আবদুল আলীম হিমু, হাসানুর রহমান ঝন্টু, মনির হোসেন কামাল ও মুশফিক আরিফসহ বরগুনাবাসীর আহবানে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন টাকা দেওয়া শুরু করে। বরগুনার প্রতিবন্ধী-ভিক্ষুকরাও এ কাজে এগিয়ে এসেছে।

করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া কড়ইবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন আকন

স্থানীয় সাংবাদিক মুশফিক আরিফ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৬৯ ব্যক্তি ও আটটি সংগঠনের পক্ষ থেকে ১০ লাখ ৬৩ হাজার ১৬০ টাকা পাওয়া গেছে। দুইটি মেশিন কিনতে ৯ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।

“দুটি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, পাঁচটি অটোমেটিক বিপি মেশিন, সাতটি পালস্ অক্সিমিটার, দুইটি ইনফ্রা থার্মোমিটার কেনা হয়েছে।”

বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মশিউর রহমান সিহাব পাঁচটি ইউপিএস দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে আরিফ জানান।

সিভিল সার্জন হুমায়ুন শাহিন খান বলেন, হাইফ্লো ন্যাজাল কেনুলা মেশিন আর মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কামরুল আজাদের ভূমিকায় বরগুনা সদর হাসপাতালে করোনাভাইরাস রোগীদের আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে।

“শ্বাসকষ্টের কারণে রোগীদের আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন চারটি কেনুলা মেশিনের মাধ্যমে রোগীদের শতভাগ অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া যাবে।”

করোনাভাইরাসে ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যু

বরগুনার তালতলী উপজেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন আকন (৭০) মারা গেছেন।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান বলে বরগুনার সিভিল সার্জন হুমায়ুন শাহিন খান জানিয়েছেন।

শাহিন জানান, গত ১৩ জুন করোনাভাইরাস শনাক্ত হলে আলতাফ ওই হাসপাতালের করোনাভাইরাস ওয়ার্ডে ভর্তি হন। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে নেওয়া হয়। এক মাস ৩ দিন পরে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

এই চেয়ারম্যানের স্ত্রী, এক মেয়ে ও দুই ছেলেরও করোনাভাইরাস পজিটিভ। তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।