ঈদ পর্যন্ত কক্সবাজারের সৈকতসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সাধারণ ছুটির মেয়াদ শেষ হলেও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতসহ হোটেল-মোটেল ও পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঈদুল আজহা পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 July 2020, 06:42 PM
Updated : 11 July 2020, 06:42 PM

শনিবার করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত জেলা কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগ গত ২৪ জুন থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত জেলার ‘রেড জোন’ ঘোষিত এলাকাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি অফিস-দপ্তর, আধা-সরকারি বা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়। শনিবার এই সাধারণ ছুটির মেয়াদ শেষ হয়েছে।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কার্যক্রমের সমন্বয়ক জ্যেষ্ঠ সচিব মো. হেলালুদ্দিন আহমেদ।

সভায় হেলালুদ্দিন আহমেদ বলেন, কক্সবাজারে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর হার বিবেচনায় প্রশাসন গত ৬ জুন কক্সবাজারকে দেশের প্রথম রেড জোন ঘোষণা করে ফের লকডাউন করেছিল। পরে এক দফায় লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর পাশপাশি ১১ জুলাই পর্যন্ত জেলার রেড জোন ঘোষিত এলাকাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।

“লকডাউনের পর সাধারণ ছুটির মেয়াদ শেষ হলেও জেলাকে এখনও পুরোপুরি করোনামুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে সরকারি-বেসরকারি অফিস-দপ্তরসহ সব ধরনেরর ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান চালু রেখে জীবনযাত্রা নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

“সভায় অংশগ্রহণকারী সব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সমুদ্র সৈকতসহ হোটেল-মোটেল আর পর্যটন কেন্দ্রগুলো প্রশাসন ঈদুল আজাহা পর্যন্ত বন্ধ করার নিয়েছে। পরবর্তীতেও সরকারি নির্দেশনা মত স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব প্রতিষ্ঠানসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলো সীমিত আকারে চালু রাখা যাবে।”

করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় প্রশাসন গত ৬ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত কক্সবাজার পৌর এলাকাকে দেশের প্রথম ‘রেড জোন’ ঘোষণা দিয়ে অবরুদ্ধ করে। পরদিন ৭ জুন থেকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করা হয় টেকনাফ পৌর এলাকা, চকরিয়া পৌর এলাকা ও চকরিয়ার ডুলহাজারা স্টেশনের আশপাশের তিনটি স্টেশন এবং উখিয়ার কোটবাজার স্টেশনসহ আশপাশের তিনটি ওয়ার্ড। এরপর ৮ জুন থেকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করে লকডাউন করা হয় উখিয়ার সদর স্টেশন, রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন কুতুপালং স্টেশন, বালুখালী স্টেশন ও থাইংখালী স্টেশন। পরবর্তীতে লকডাউনের মেয়াদ আরও ১০ দিন বাড়িয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত নেওয়া হয়।

এদিকে, স্থানীয় সরকার বিভাগ গত ২৪ জুন থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত জেলার ‘রেড জোন’ ঘোষিত এলাকাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি অফিস-দপ্তর, আধা-সরকারি বা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়। শনিবার এই সাধারণ ছুটির মেয়াদ শেষ হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্যরা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মাহবুব আলম তালুকদার, পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অনুপম বড়ুয়া, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ডা. মহিউদ্দিন মো. আলমগীর, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। 

এছাড়া সভায় কক্সবাজার পৌর মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যানগণ, সেনাবাহিনী, নৌ-বাহিনীর প্রতিনিধি, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, গত ১৪ এপ্রিল প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৫৫ জন রোহিঙ্গাসহ মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৯৭৮। এদের মধ্যে ৫ জন রোহিঙ্গাসহ মৃত্যু হয়েছে ৪০ জনের। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছে দেড় হাজারের বেশি।