টাঙ্গাইলে রাস্তা নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় একটি সড়ক নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিএম এ রাজ্জাক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 July 2020, 04:18 PM
Updated : 3 July 2020, 04:19 PM

স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে রাস্তার কাজ করা হচ্ছে; রাস্তার পাশের জমি-মালিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করা হচ্ছে।

তবে ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করেছে

এদিকে, অভিযোগ ওঠার পর রাস্তার নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুর রহমান।

মির্জাপুর উপজেলার ভাওড়া ইউনিয়নের সরকারপাড়া-নয়াপাড়া পর্যন্ত এক হাজার ২২০ মিটার রাস্তা নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্ত (এলজিইডি)।

উপজেলার এলজিইজি অফিস জানায়, এলজিইডির বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পটির মোট বরাদ্দ আড়াই কোটি টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফ্রেন্ডস কনস্ট্রাকশন।

স্থানীয় নাছির নামের এক ব্যক্তি সাংবাদিকদের বলেন, ঠিকাদার, স্থানীয় প্রভাবশালী মহল এবং কিছু অসাধু মানুষ যোগসাজশে নিরীহ কৃষকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক তাদের কৃষিজমি থেকে এস্কেভেটর দিয়ে মাটি কেটে নিয়ে রাস্তা নির্মাণ করেছে।

নাছির বলেন, এলাকার কিছু মানুষ কৃষকদের পক্ষ নেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে পুলিশি হয়রানির ভয় দেখানো হয় বলেও অভিযোগ সাধারণ মানুষের।

এই রাস্তার পাশে চারটি বাড়ি রয়েছে। ওই বাড়িগুলোর মালিকদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা না করে উল্টো তাদের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগও রয়েছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

নয়াপাড়ার আব্দুল মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকার পাড়ার দুই লোক এই রাস্তার ঠিকাদার শাহীনের নাম দিয়ে আমার দুই ভাই রাশেদ ও নাছিরকে হুমকি দিত। আমাদের বাড়ি ভেঙে দেবে বলে শাসাত। আমরা তিনভাই ভয়ে তাদের ৩০ হাজার টাকা দিয়ে রাস্তার পাশের মাটি কিনে দেই।”

“এভাবে রাস্তার জন্য কারো কাছে জোড় করে টাকা আদায় করা হয় আমি জানতাম না। আমি তাদের শাস্তি দাবি করছি।”

ভাওড়া ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি জুয়েল ইসলাম বলেন, “যে মাটি ঠিকাদার নিজের দেওয়ার কথা, সে মাটি কৃষকদের ক্ষেত থেকে কাটা অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয়। ভেকুর চাবি নিয়ে নেওয়া হলে তা ভাওড়া ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনের কথায় ফেরত দিতে হয়েছে।”

জুয়েল বলেন, চাবি ফেরত পেয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবার কৃষকের জমির মাটি কাটা শুরু করে। তিনদিন মাটি কাটার পর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জুবায়ের হোসেন মাটি কাটা বন্ধ করে দেন।

ভাওড়া ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, কাজে অনিয়মের খবর তিনি পেয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে ঠিকাদারকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পটির উপ-সহকারী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, “ঠিকাদার দুই ট্রাক নিম্নমানের ইট এনেছিল; তা আমি উপস্থিত থেকে ফেরত পাঠিয়েছি। এখন নির্মাণ সামগ্রীর মান ভালো। স্থানীয়দের সহায়তায় এখন কাজ চলছে।”

প্রকল্পটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফ্রেন্ডস কনস্ট্রাকশনের শাহিন আলম বলেন, “রাস্তা করতে ওই এলাকার করও কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়া হয়নি।”

নিম্নমানের ইট বা খোয়া দিয়ে কাজ করার ব্যাপারে তিনি বলেন, “আমাকে না জানিয়ে ট্রাকওয়ালা কিছু নিম্নমানের ইট এনেছিল, তা আবার ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”