নবাবগঞ্জে বিদ্যুতের লাইনে কাজের সময় স্পৃষ্টে ২ শ্রমিকের মৃত্যু

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুইজন বিদ্যুৎ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। একই দুর্ঘটনায় আরেক শ্রমিক আহত হয়েছেন।

কেরানীগঞ্জ-দোহার-নবাবগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 July 2020, 08:08 PM
Updated : 1 July 2020, 08:08 PM

বুধবার বিকালে উপজেলার যন্ত্রাইল ইউনিয়নের ভাওয়ালিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত শ্রমিকরা হলেন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার রাজারহাট গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে জুয়েল রানা (২৫) ও একই উপজেলার দোলন গ্রামের নজীর হোসেনের ছেলে মমিনুল ইসলাম (২২)।

এ দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিক সুমনকে (১৮) নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

পল্লী বিদ্যুতের অভিযোগ, বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ থাকলেও কাছের একটি বাংলালিংক টাওয়ারের জেনারেটর হঠাৎ চালু করলে কাজ করা অবস্থায় লাইনে বিদ্যুৎ চলে আসে এব্ং তাদের কর্মীরা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।

তবে বাংলালিংকের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বিদ্যুৎ শ্রমিক গণি, আতিক হাসানসহ এলাকাবাসী জানান, ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর অধীনে ১১ হাজার ভোল্টেজের নবাবগঞ্জ-শোল্লা লাইনের তার পরিবর্তন করার কথা বলে মঙ্গলবারে এলাকায় মাইকিং করা হয়। বুধবার সকাল থেকে কাজ শুরু করেন ঠিকাদার আব্দুর রহমানের প্রতিষ্ঠানের ১০/১২ জন শ্রমিক। বিকাল ৩টার দিকে ভাওয়ালিয়া এলাকার বিদ্যুৎ খুঁটির দুই পাশের তারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। শ্রমিকরা বিচ্ছিন্ন তিনটি খুঁটির বিদ্যুতের তার পরিবর্তনের কাজ করছিলেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম বলেন, “এ সময় ওই এলাকার আবুল হোসেনের বাড়ির ছাদে থাকা বাংলালিংক টাওয়ারের ব্যাটারি চার্জ দিতে ভ্রাম্যমাণ জেনারেটর থেকে সংযোগ দেন ওই কোম্পানির লোকজন।

“জেনারেটর স্টার্ট দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কাজ করতে থাকা পল্লী বিদ্যুতের ওই তিন শ্রমিক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।”

বাংলালিংকের টেকনিশিয়ানরা পালিয়ে গেলেও তাদের গাড়ির চালককে আটক করেছেন এলাকাবাসী।

এদিকে, স্থানীয়দের সহায়তায় ওই তিন শ্রমিককে উদ্ধার করে উপেজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মমিনুল ও জুয়েল রানাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম আরও বলেন, “জেনারেটর চালু দেওয়ার সময় বাড়ির মূল বিদ্যুৎ  সংযোগের মেইন সুইজ বন্ধ করা হয়নি। এতে ওই জেনারেটরের বিদ্যুৎ পল্লী বিদ্যুতের তারের মাধ্যমে কাজ করতে থাকা বিদ্যুতের লাইনে চলে যায়। এতে কাজ করা অবস্থায় থাকা শ্রমিকরা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।”

এ ব্যাপারে বাংলালিংকের এরিয়া ম্যানেজার মানিক উদ্দীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের টাওয়ারের বিদ্যুৎ সংযোগের দুটো ব্রেকারই বন্ধ ছিল। জেনারেটরের সাথে পল্লী বিদ্যুতের তারের কোনো সংযোগ ঘটার সম্ভাবনা নেই। পল্লী বিদ্যুতের কোনো ভুলে এ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”

নবাবগঞ্জ থানার এসআই মৃত্যুঞ্জয় কির্তনীয়া বলেন, সংবাদ পেয়ে হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন করে থানায় নেওয়া হচ্ছে। দুর্ঘটনার তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।