কক্সবাজার সৈকতে ভেসে এল মৃত ‘পরপয়েস’

টেকনাফে মৃত তিমি ভেসে আসার চার দিনের মাথায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে এবার ভেসে এসেছে একটি মৃত ‘ফিনলেস পরপয়েস’।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 July 2020, 07:37 PM
Updated : 2 July 2020, 03:41 AM

বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার সৈকতের শৈবাল পয়েন্টের বালিয়াড়িতে এই স্তন্যপায়ী প্রাণীটিকে দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা।

সামুদ্রিক মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশরাফুল হক জানিয়েছেন, এটি দেখতে ডলফিনের মতো হলেও তা নয়; এটি ডলফিন জাতীয় স্তন্যপায়ী ‘ফিনলেস পরপয়েস’।

ডলফিনের লম্বা নাক, বড় মুখ, এবং পিঠে লম্বা ও বাঁকানো ডানার মতো ফিন থাকে। কিন্তু পরপয়েসের নাক ভোঁতা হয়, মুখ ডলফিনের তুলনায় ছোট হয় এবং পিঠের উপর ফিন কোনো কোনোটির থাকে না, থাকলেও হয় ছোট।  

এর আগে গত সোমবার (২৭ জুন) কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ সৈকতের গোলারচর পয়েন্টে একটি মৃত তিমি পাওয়া যায়।

তিমিটির পিঠের চামড়া কয়েক জায়গায় উঠে গেলেও সেগুলো আঘাতের চিহ্ন নয় বলে ধারণা প্রত্যক্ষদর্শীদের।

তবে পরপয়েসটির দেহে আঘাত চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশবাদী সংগঠন সেভ দ্য নেচার অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আ ন ম মোয়াজ্জেম হোসেন

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আঘাতের কারণে ডলফিনটির (পরপয়েস) নাড়িভুড়ি বের হয়ে গেছে।”

তার ধারণা, মৃত্যুর পরপরই এটি ভেসে আসে।

“সাগরে মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ হলেও কোস্টগার্ডসহ সংশ্লিষ্টদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন পয়েন্টে দিয়ে কিছু ট্রলারকে সাগরে মাছ ধরতে যেতে দেখা গেছে। হয়ত এসব ট্রলারে সঙ্গে ধাক্কা লেগে অথবা জেলেদের জালে আটকা পড়ে ডলফিনটির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরাও ইচ্ছে করে ডলফিনটি মেরে ফেলতে পারে। “

কক্সবাজার শহরের সমিতি পাড়ার বাসিন্দা আব্দুর সবুর গোলাপ বলেন, বুধবার বিকালে সাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে একটি মৃত ‘ডলফিন’ ভেসে আসতে দেখে পরিবেশবাদী সংগঠনে খবর পাঠান তিনি।

ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার অঞ্চলের এসপি মো, জিল্লুর রহমান বলেন, সৈকতের বালিয়াড়িতে একটি মৃত ‘ডলফিন’ ভেসে আসার খবর পাওয়ার পর তা পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে।

তবে এ নিয়ে রাতে দায়িত্বশীল উপকূলীয় বনবিভাগের চট্টগ্রাম বনসংরক্ষক এসএম গোলাম মওলাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলতে একাধিক মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও সম্ভব হয়নি।

এদিকে সেভ দ্য ন্যাচার অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আন.ন.ম মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, চলতি বছর জানুয়ারি মাস থেকে গত পাঁচ মাসে বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্টের সৈকতে এ পর্যন্ত ১৬টি মৃত ডলফিন ও ১টি তিমির মৃতদেহ কক্সবাজার সৈকতে ভেসে আসার তথ্য রয়েছে। এগুলোর বেশির ভাগেরই দেহে ক্ষত ও আঘাতের চিহ্ন ছিল।