জামালপুরে বন্যা অবনতি: দুই শিশুর ডুবে মৃত্যু

পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার মধ্যে জামালপুরে পানিতে ডুবে মারা গেছে স্কুলছাত্রসহ দুই শিশু।

জামালপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2020, 08:41 PM
Updated : 29 June 2020, 08:41 PM

মেলান্দহের দুরমুঠ ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেকুজ্জামান জুবেরি জানান, সোমবার সকালে বন্যার পানিতে ডুবে রোকনাই গ্রামে মো. সানি (১৪) নামে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র মারা গেছে।

সানি রোকনাই গ্রামের রেহান আলীর ছেলে।

এছাড়া, মাদারগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, মির্জাপুর গ্রামের বাবুল মিয়ার সাত বছরের শিশু সোহান রোববার পানিতে ডুবে মারা যায়।

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে ১৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ-সীমার ৮৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জামালপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা নায়েব আলী জানান, জেলার ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, বকশীগঞ্জ ও সরিষাবাড়ি উপজেলার ২৭টি ইউনিয়ন এবং ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ ও মাদারগঞ্জ পৌরসভার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

“দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বন্যার পানি ঢুকেছে।

“সরকারি হিসাবে জেলায় ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি। গবাদি পশুসহ মানুষরা বিভিন্ন বাঁধ ও আশ্রয় কেন্দ্র্রে আশ্রয় নিচ্ছেন। বন্যা কবলিত ইউনিয়নগুলোর সাথে উপজেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।”

নায়েব আলী জানান, বন্যা কবলিত এলাকার জন্য ২৭টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আমিনুল ইসলাম জানান, বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে জেলার ৫ হাজার হেক্টর জমির পাট, আউশ, বাদাম ও সবজিসহ বিভিন্ন ফসল।

ইসলামপুরের সাপধরির কৃষক আজিজুর রহমান চৌধুরী জানান, বন্যায় তার ২২ বিঘা জমির পাট ডুবে নষ্ট হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে তার কয়েক একর জমির সবজিসহ অন্যান্য ফসল।

ইসলামপুরের বেলগাছা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল মালেক জানান, সিন্দুরতলি, মন্নিয়া, বরুল ঘোনাপাড়া যমুনার পানিতে ডুবে গেছে। পাট, আউশ ধান, বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

চিনাডুলি ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জানান, চিনাডুলি ইউনিয়নের দক্ষিণ চিনাডুলি, দেওয়ানপাড়া, ডেবরাইপ্যাচ, বলিয়াদহ, পশ্চিম বামনাসহ ইউনিয়নের প্রায় পুরোটাই পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ।

“অসংখ্য কৃষকের পাট ও আউশ ধান ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে।”

ইসলামপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। বন্যা মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।

ইসলামপুরের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জামাল আব্দুন নাছের বাবুল জানান, যমুনার পানি দ্রুত গতিতে বাড়ছে। সেই সঙ্গে পুরাতন ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদীর পানিও বাড়ছে।

সোমবার থেকে বন্যা মোকাবেলায় উপজেলা পরিষদ ত্রাণসামগ্রী শুকনো খাবার বিতরণ শুরু করেছে বলে জানান তিনি।