অভিযোগ সম্পর্কে জানেন না ‘অভিযোগকারী’

করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত ও হতদরিদ্রদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের তালিকা তৈরিতে ‘ভুয়া অভিযোগকারী নামে’ দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে বলে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি জানিয়েছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2020, 04:35 PM
Updated : 29 June 2020, 04:35 PM

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার তিনজন ইউপি চেয়ারম্যান ও একজন প্যানেল মেয়রের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করা হয়েছে বলে কসবার ইউএনও মাসুদ-উল আলম জানান।

সোমবার দুপুরে কসবা মহিলা কলেজ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই পাঁচ ব্যক্তিকে হাজির করেন অভিযোগের মুখে থাকা ওই চার জনপ্রতিনিধি। 

গত ২১ জুন কসবা পৌরসভার প্যানেল মেয়র আবু জাহের, ২২ জুন কসবা পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান ছায়েদুর রহমান মানিক এবং ২৩ জুন খাড়েরা ইউপি চেয়ারম্যান কবির আহমেদ ও বায়েক ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন ভূইয়ার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়।

তাদের বিরুদ্ধে করোনাভাইরাস মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত ও হতদরিদ্রদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে আড়াই হাজার টাকা করে পেতে সুবিধাভোগীর তালিকা প্রণয়নে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের অভিযোগ করা হয়েছে।  

জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া লিখিত এই অভিযোগে অভিযোগকারী হিসেবে যাদের নাম রয়েছে তাদের কেউ এই অভিযোগ সম্পর্কে অবগত নন বলে দাবি করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন কসবা পৌরসভার প্যানেল মেয়র আবু জাহের, কসবা পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান ছায়েদুর রহমান মানিক ও বায়েক ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন ভূইয়া।

আর খাড়েরা ইউপি চেয়ারম্যান কবির আহমেদ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় তার পক্ষে প্যানেল চেয়ারম্যান আবু সাইম অভিযোগের বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।

অভিযোগকারী হিসেবে যাদের নাম দেওয়া হয়েছে তারা হলেন কাউসার মিয়া, বাছির, রফিকুল ইসলাম, কামাল ও সাদ্দাম।

সংবাদ সম্মেলনে তারা কেউই অভিযোগ করেননি এবং অভিযোগের বিষয়বস্তু সম্পর্কে অবগত নন বলে তারা দাবি করেন। এছাড়া লিখিত অভিযোগে তারা স্বাক্ষর করেননি বলেও জানান। তাদের মধ্যে একজন স্বাক্ষরই করতে পারেন না বলেও তারা জানান।

কসবা পৌরসভার প্যানেল মেয়র আবু জাহের বলেন, “যারা অভিযোগ করেছেন তাদের আমি চিনিও না। কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ পরিবেশনের ফলে সামাজিকভাবে এবং আত্মীয়-স্বজনদের কাছে আমি হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছি।”

রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে তাদের বিরুদ্ধে বানোয়াট অভিযোগ করা হয়েছে বলে তার ভাষ্য।

কসবা পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান ছায়েদুর রহমান মানিক বলেন, “যাদেরকে নাম দিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে তাদের কেউই অভিযোগে স্বাক্ষর করেননি; বরং তারা অভিযোগের খবর জেনে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। যারাই এ ধরনের অপচেষ্টা চালিয়ে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি।”

বায়েক ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন ভূইয়া বলেন, “সামাজিকভাবে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যেই বেনামে আমার নামে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিয়োগকারী হিসেবে যাদের নাম রয়েছে বাস্তবে তাদের কোনো অস্তিত্বই নেই। যারা আড়ালে থেকে আমাদের হয়রানি করছে তাদের বিচার চাই।”

এ ব্যাপারে কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ-উল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অভিযোগকারী হিসেবে যাদের নাম আছে তারা অস্বীকার করলেও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।