রোববার সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি আমিরুল হক খোকন।
তবে জেলা প্রশসান এ ব্যাপারে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
চার মাস আগে জেলা প্রশাসনের মূল্য নির্ধারণ কমিটির সভায় প্রতি কেজি কাঁচা চা-পাতার মূল্য ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। গত বৃহস্পতিবার কারখানা মলিকরা দাম ২ টাকা কমিয়ে ১২ টাকা করেন।
আমিরুল হক খোকন বলেন, প্রতি মৌসুমে চা-নিলাম বাজারের গড় মূল্যের উপর ভিত্তি করে কাঁচা চা-পাতার মূল্য নির্ধারণ করা হয়। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে মূল্য নির্ধারণ কমিটির এক সভায় প্রতি কেজি কাঁচা চা-পাতার মূল্য ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
“পরবর্তী সভা না হওয়া পর্যন্ত ধার্যকৃত মূল্যে কাঁচা চা-পাতা ক্রয় অব্যাহত থাকবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া চায়ের ১৫টি নিলাম সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত এমন সিদ্ধান্ত বহাল থাকারও নিয়ম রয়েছে।”
তিনি বলেন, এসব কিছুকে উপেক্ষা করে কারখানা মালিকরা একতরফাভাবে গত ২৫ জুন কাঁচা চা-পাতার মুল্য ১২ টাকা নির্ধারণ করেছেন। এছাড়া নানা অজুহাতে মোট সরবরাহকৃত চা-পাতার ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাদ (কর্তন) দিচ্ছে।
আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সন্তোষজনক মূল্য নির্ধারণ করা না হলে আন্দোলনের কর্মসুচি ঘোষণা করা হবে বলে তিনি হুঁশিয়ার করেন।
অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট বলেন, কারখানায় সরবরাহকৃত নিজের উৎপাদিত কাঁচা চা-পাতা থেকেও ২০ শতাংশ কর্তন করা হয়েছে। চা বোর্ডের হিসাবে এক কেজি কাঁচা চা-পাতার উৎপাদন মুল্য প্রায় ১৭ টাকা।
“সেখানে নির্ধারিত ১৪ টাকায় বিক্রি করলেও কৃষকদের ৩ টাকা ক্ষতি হয়। তার ওপর কারখানা মালিকদের একততরফাভাবে ১২ টাকা দর নির্ধারণ কৃষকদের ওপর জুলুম করার মত ঘটনা।”
এমন তৎপরতা পঞ্চগড়ের সম্ভাবনাময় চা শিল্পকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র বলে তিনি মনে করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবু বকর ছিদ্দিক, সহসভাপতি এবিএম আখতারুজ্জামান শাহজাহান, জসিয়ার রহমান প্রধান, মতিয়ার রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে চা কারখানা মালিকদের সংগঠনের সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, “নিলাম মার্কেটে চায়ের মূল্য কমে গেছে। বাগান মালিক বা চা চাষিরা বয়স্ক ও ভিজা কাঁচা চা-পাতা সরবরাহ করছে। এজন্য কারখানা মালিকরা বাধ্য হয়ে মূল্য কমিয়েছে এবং কর্তন করছে।”
জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “বিষয়টি আমরা অবগত আছি। এ নিয়ে সোমবার সভা আহবান করা হয়েছে। সেখানে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
বাংলাদেশ চা বোর্ডের নর্দার্ন বাংলাদেশ প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ শামীম আল-মামুন বলেন, ২০০০ সালে পঞ্চগড়ে চা চাষ শুরু হয়। বর্তমানে ৭ হাজার ৫৯৮ একর জমিতে চায়ের আবাদ হচ্ছে। চা প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য কারখানা চালু রয়েছে ১৮টি। গত মৌসুমে ৯২ লাখ ৪৯ হাজার ৩২৫ কেজি কাঁচা চা-পাতা উৎপাদিত হয়েছে। এবার তা কোটি কেজি ছাড়িয়ে যাবে।