সিরাজগঞ্জে হামলায় আহত ছাত্রলীগ নেতাকে ঢাকায় প্রেরণ

সিরাজগঞ্জে `দলীয় কোন্দলে' হামলার শিকার’ ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক বিজয়কে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 June 2020, 03:02 PM
Updated : 27 June 2020, 03:03 PM

শনিবার বিকালে তাকে ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে বলে জানান জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বিন আহম্মেদ।

আহত এনামুল হক বিজয় সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক  এবং কামারখন্দের জামতৈল হাজী কোরপ আলী ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলগের সভাপতি।

ছাত্রলীগ আয়োজিত সদ্য প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিমের জন্য ‘দোয়া মাহফিলে’ যোগ দিতে যাওয়ার পথে গত শুক্রবার বিকালে শহরের বাজার স্টেশন এলাকায় হামলার শিকার হন তিনি।

আহত বিজয়কে প্রথমে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল এবং পরে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় বিজয়ের বড় ভাই রুবেল বাদী হয়ে শনিবার বিকালে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে ছাত্রলীগের পাঁচ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ্যসহ ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বিন আহম্মেদ জানান, শহরের শহীদ এম মনসুর আলী অডিটোরিয়ামে প্রয়াত নেতা মোহাম্মদ নাসিমের স্মরণে মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল।

“সেই অনুষ্ঠানে আসার পথে বাজার স্টেশন এলাকায় জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দিয়ারধানগড়ার জিহাদ এবং আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক ভাঙ্গাবাড়ি মহল্লার আল আমিনসহ বেশ কয়েকজন মিলে এনামুল হক বিজয়কে কুপিয়ে এবং লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।”

দলের মধ্যে কোন্দল থাকতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কিন্তু এভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করা নিন্দনীয় অপরাধ।”

এদিকে, এ হামলার প্রতিবাদে পুলিশের ‘বাধার’ পরও সিরাজগঞ্জ ও কামারখন্দ উপজেলায় পৃথক পৃথকভাবে মানববন্ধন হয়েছে।

কামারখন্দ উপজেলার বাগবাড়ি-পাইকোশা আঞ্চলিক সড়কে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কামারখন্দ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সদস্য রাইসুল ইসলাম রিপন বলেন, “জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসান হাবিব খোকার সমর্থকরা ছাত্রনেতা বিজয়কে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করেছে।

“এর প্রতিবাদে আমরা জামতৈল, কড্ডা ও এনডিপি অফিসের সামনে মানববন্ধন করার চেষ্টা করলেও পুলিশের বাধার কারণে তা সম্ভব হয়নি।”

এরপর সদর উপজেলার সয়দাবাদ কাঠালতলা এবং কামারখন্দ উপজেলার বাগবাড়ি-পাইকোশা আঞ্চলিক সড়কে পৃথকভাবে মানববন্ধন করেন বলে জানান তিনি।

মানববন্ধনে পুলিশ বাধা দেয়নি উল্লেখ করে সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, যেসব স্থানে মানববন্ধন হওয়ার কথা ছিল, সেসব স্থানে আইনশৃংখলা পরিস্থিতির যাতে অবনতি না হয়, সেই কারণে পুলিশ অবস্থান নিয়েছিল।

এ ঘটনায় মামলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। মামলার প্রস্তুতি চলছে।”

তবে এ হামলায় জড়িত বলে ছাত্রলীগের যেসব নেতাদের নাম উঠে এসেছে তাদের কয়েকজন এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসান হাবিব খোকা বলেন, “ঘটনার পরে ফেইসবুকে পোস্ট দিয়ে আমাকেও মারপিটের জন্য দায়ী করা হয়েছে।”

দলের কোনো কোন্দল নেই দাবি করে তিনি যোগ করেন, এ ঘটনার তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিহাদ বলেন, “শত্রুতাবশত মারপিটের ঘটনায় আমাকে দায়ী করা হচ্ছে। প্রকৃত পক্ষে আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না, জেলা ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে ছিলাম।”

অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা ছাত্রলীগের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন বলেন, “আমি বালুমহালে কাজ করি। কাজ শেষে প্রতিদিন রাতে বাড়ি যাই। ঘটনাস্থলে ছিলাম না। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।”