‘চাল তো পাইইনি, খোঁজ নেওয়ায় বকেছেন’

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে রেড-জোন ঘোষণা করে ফের অবরুদ্ধ করা ফরিদপুরের ভাঙ্গা পৌর এলাকায় বিশেষ ওএমএসের চাল নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 June 2020, 12:14 PM
Updated : 27 June 2020, 12:14 PM

স্থানীয় বাসিন্দা শওকত মুন্সী বলেন, চাল তো পাইইনি, এ কথা ইউএনওসহ কয়েক জায়গায় বলাতে কাউন্সিলর বকাঝকা করেছেন।

শওকতের মতো অন্য ভুক্তভোগীরা জানান, তালিকায় ও কার্ডে নাম থাকলেও তারা কোনো চাল সহায়তা পাননি।  এসব অনিয়মের জন্য ভাঙ্গা পৌর মেয়র ও এক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের লিখিত অভিযোগ দেওয়াও হয়েছে।

ফরিদপুরের ডিসি অতুল সরকার বলেন, আমাদের কাছে কয়েক জায়গা থেকে অভিযোগ এসেছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

“ভাঙ্গার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। যদি জালিয়াতি, স্বজনপ্রীতি বা দুর্নীতি হয়ে থাকে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

দেশে করোনাভাইরাস নিয়ে সংকট শুরুর পর বিনামূল্যে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি বিশেষ ওএমএস এ ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল পাচ্ছেন কার্ডধারীরা।

সম্প্রতি পৌর এলাকার কাফুরা সদরদী গ্রামের মিতু আক্তারের কার্ড নিয়ে চাল কিনতে আসেন এক যুবক। অথচ মিতু আক্তার জানতেন না তার নামে ওএমএস কার্ড রয়েছে। এ ঘটনায় বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। ওই কার্ডে ভাঙ্গা পৌর মেয়র আবু রেজা মো. ফয়েজের এবং স্থানীয় কাউন্সিলর টুটুল ফকিরের সিল রয়েছে। ওই কার্ড ছাড়াও বেশ কয়েকটি কার্ড জব্দ করে স্থানীয়রা।

ইসমাইল মুন্সী বলেন, “৯ নম্বর ওয়ার্ডেই আমরা ২০/২২ জনকে চিহ্নিত করেছি যারা অন্যের কার্ডে চাল নিচ্ছেন।

“শুধুমাত্র এই একটি ওয়ার্ড না, পুরো পৌরসভার সব জায়গাতেই একইভাবে জালিয়াতি হয়েছে।”

মিতু আক্তার, শওকত মুন্সী ছাড়াও চাদ মিয়া মুন্সী, সোহেল শেখ, অনিক মুন্সী, নাসির মুন্সী, সজিব শেখ, পারুলী বেগম, আজীম মুন্সী, আক্কাস মুন্সীসহ আরো বেশ কয়েকজনের অভিযোগ, ‘তাদের নামে কার্ড রয়েছে কিন্তু কোনো চাল পাননি।’

তবে পৌরসভার  ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর টুটুল ফকির জানান, অনেক কার্ডের মধ্যে ২/১টায় ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল হতে পারে। ’

“অনেক সময় দেখা যায় একই বাড়ির বা পাশাপাশি বাড়ির ১০ জনের কার্ড একজনের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছি-সবাইকে দেওয়ার জন্য। এমনও হয়েছে, যার কাছে দিয়েছি সে কার্ডগুলো বিতরণ করে নাই।”

এসব অভিযোগের বিষয়ে পৌর মেয়র আবু ফয়েজ মো. রেজা জানান, পৌরসভার ২৭টি গ্রামে চার হাজার ২শ কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর ও আওয়ামলীগ নেতাদের দেওয়া তালিকা থেকে কার্ডগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলছেন তিনি।

কাফুরা সদরদীতে ‘কিছু অভিযোগ উঠেছে’ স্বীকার তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্ত করতে প্যানেল মেয়র লিয়াকত মোল্যাকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

“কাউন্সিলর বা পৌরসভার কারো গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে, বিষয়টি দ্রুত খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন।