আয়হীন মানবেতর জীবনে টাঙ্গাইলের কিন্ডারগার্টেন শিক্ষকরা

করোনাভাইরাস রোধে বন্ধ থাকায় কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে; এ পরিস্থিতি থেকে উদ্ধারে সরকারি সাহায্যের দাবি জানানো হয়েছে।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2020, 12:50 PM
Updated : 23 June 2020, 12:50 PM

মঙ্গলবার সকালে এ প্রণোদনার দাবিতে উপজেলার নয়ন খান মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে টাঙ্গাইল-আরিচা আঞ্চলিক মহাসড়কে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগীরা।

নাগরপুর উপজেলা কিন্ডারগার্টেন সমিতির উদ্যোগে এ কর্মসূচি প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, “সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়ে নাগরপুর উপজেলা কিন্ডারগার্টেন সমিতির পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের বিষয়ে জানানো হবে।”

নাগরপুর উপজেলায় ৭৫টি কিন্ডারগার্টেনে প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থীকে শিক্ষাদানে অন্তত ৭০০ শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছেন বলছে এ কিন্ডারগার্টেন সমিতি। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে কোনো বেতন-ভাতা ও সুবিধা পান না।

উপজেলা কিন্ডারগার্টেন সমিতির সভাপতি মীর ওবায়েত হোসেন বলেন, এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগই শিক্ষার্থীর মাসিক বেতনের টাকায় পরিচালিত হয়।

“করোনাভাইরাসের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোয় ছুটি থাকায় শিক্ষার্থীদের বেতনও বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি এসব শিক্ষকের প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ রয়েছে। ফলে কোনোদিক থেকেই তারা উপার্জন করতে পারছেন না।

“বিত্ত না থাকলেও সমাজে তারা শিক্ষক হিসেবেই সম্মানীয়। ফলে তারা না পারছেন লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণ নিতে, না পারছেন মুখ ফুটে কাউকে কিছু বলতে। ফলে এখন তারা তাদের সংসারের ব্যয় বহন করতে হিমশিম খাচ্ছেন।”

কিন্ডারগার্টেনের কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা হয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

স্কুলে ও প্রাইভেটে পড়িয়ে পরিবার চালানো এক শিক্ষক বলেন, “এমনিতেই কেজি স্কুল থেকে ঠিকভাবে বেতন পাই না তার ওপর করোনায় লকডাউন চলছে। ফলে অসচ্ছল শিক্ষকদের পরিবারে অভাব অনটন চলছে।

“শিক্ষিত মানুষ চক্ষুলজ্জার ভয়ে কাউকে বলতেও পারছি না, আবার সইতেও পারছি না। তাই সরকার ও সমাজের বিত্তবান মানুষরা যেন আমাদের কষ্ট একটু বোঝার চেষ্টা করেন।”

নাগরপুর উপজেলা কিন্ডারগার্টেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, “আমাদের কেজি স্কুলের শিক্ষকরা সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পান না। এ দুর্যোগ মুহূর্তে এখনও পর্যন্ত শিক্ষকরা সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা না পাওয়ায় তাদের পরিবারে হাহাকার বিরাজ করছে। তাই সরকারের কাছে চলমান দুর্যোগে কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারি সহায়তার আবেদন জানাচ্ছি।”

আর্থিক সহায়তার আশায় নাগরপুরের ৪৩৬ জন শিক্ষক-কর্মচারীর নাম-পরিচয় মোবাইল নম্বরসহ একটি তালিকা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জমা দিয়েছেন তারা।