কুষ্টিয়ায় রাস্তার কার্পেটিং উৎপাটন, ঠিকাদারের চাঁদাবাজি মামলা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় রাস্তায় সদ্য বসানো কার্পেটিং তুলে ফেলার পর ওই কাজের ঠিকাদার স্থানীয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করেছেন।

কুষ্টিয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 June 2020, 10:52 AM
Updated : 22 June 2020, 10:52 AM

গত বুধবার [১৭ জুন] রাস্তার কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টিটু এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী ফিরোজ আহমেদ বাদী হয়ে চাঁদাদাবি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, মারধর ও ক্ষতিসাধনের মামলা করেন।

দৌলতপুর থানায় করা এই মামলায় উপজেলার হোসেনাবাদ গ্রামের নাজির উদ্দিনের ছেলে ডেটুলসহ (৩২) ১৩ জনের নামোল্লেখ করেছেন।

কুষ্টিয়ার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে জানা যায়, তাদের অধীনে দৌলতপুর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের মথুরাপুর জিসি থেকে জুনিয়াদহ জিসি পর্যন্ত এক দশমিক ৭৬২ কিলোমিটার রাস্তার প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয় ৬৯ লাখ ২৭ হাজার টাকা। এর নির্মাণ কার্যাদেশ দেওয়া হয় টিটু এন্টারপ্রাইজকে।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ১৪ জুন দুপুরে স্থানীয় হোসেনাবাদ গ্রামের নাজির উদ্দিনের ছেলে ডেটুলের নেতৃত্বে ১৩ জনের দল রাস্তার কার্পেটিং কাজ করার সময় সাইট ম্যানেজার মুনতাজ আলীর কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন। না দিলে তাদের প্রাণনাশের হুমকিসহ রাস্তার কাজের ক্ষতি সাধনের আলটিমেটাম দিয়ে যায়।

“পরদিন ভোরে স্থানীয় মোস্তফা কামাল হাজির বাড়ির সামনের সদ্য কার্পেটকৃত রাস্তার প্রায় ৬শ মিটার কার্পেট উপড়ে ফেলে পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করেছে।” 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষক বলেন, “কদিন ধরেই শুনছিলাম রাস্তার কাজ নিয়ে একটা ঝামেলা চলছে। ১৫ জুন ভোরে হাঁটতে রেরিয়ে দেখি আগের দিন সন্ধ্যায় কার্পেটিং করা রাস্তাটি কে বা কারা শাবল ঢুকিয়ে উপরে ফেলেছে।”

উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সর্দ্দার হাশিম উদ্দিন বলেন, রাস্তা নির্মাণে অনিয়ম হয়েছে বলে হোসেনাবাদের রাস্তা নিয়ে একটা ‘বানোয়াট’ কথা চালু হয়েছে। স্থানীয় কিছু স্বার্থন্বেষী মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই কাজটি ঘটিয়েছে। পাকা রাস্তার কার্পেটিং ৬/৭ ঘণ্টার মধ্যেই শাবল ঢুকিয়ে তুলে ফেলে। তাছাড়া এলজিইডির কর্মকর্তারাও এসেছিলেন; উনারাও বলছেন কাজে কোনো অনিয়ম নেই।

দৌলতপুর উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার উদ্দিন জোয়ার্দ্দার বলেন, গ্রামবাসীর পক্ষে মোতাসিম বিল্লাহ নামে একজন কুষ্টিয়া এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলীকে রাস্তার কাজে অনিয়মের অভিযোগ করেন।

“পরে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের বিষয়টি দেখার জন্য স্যাম্পল সংগ্রহ করে এলজিইডির ল্যাবে প্রেরণ করি। দুইদিন পর ল্যাব রিপোর্টে জানতে পারি কাজটি সিডিউল মাফিক হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, এরপরও কে বা কারা ঠিকাদারের সঙ্গে কোনো ঝামেলা সৃষ্টি করতেই রাস্তার কার্পেট তুলে ফেলেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

দৌলতপুর থানার ওসি এস এম আরিফুর রহমান বলেন, ফিরোজ আহমেদ বাদী হয়ে চাঁদাদাবি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, মারধর ও ক্ষতিসাধনের অভিযোগে গত ১৭ জুন ডেটুলসহ ১৩ জনের নামোল্লেখ করে থানায় মামলা করেছেন। মামলাটি তদন্তাধীন আছে।

এদিকে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বুধবার হোসেনাবাদ গ্রামের এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে। তারা রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন।