আম্পান: এখনও বহু গ্রামে বইছে জোয়ার-ভাটা

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পান তাণ্ডবের তিন সপ্তাহ পরও সাতক্ষীরার উপকূলীয় বহু গ্রামে জোয়ারভাটা বয়ে চলেছে।

শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন সাতক্ষীরা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 June 2020, 11:51 AM
Updated : 14 June 2020, 11:51 AM

বাড়িঘরে পানি থাকায় রান্না-খাওয়া, চলাফেরাসহ সবকিছুতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তিন ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। গত ২১ মে রাতে আম্পানে কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে এই দুর্ভোগে পড়েন তারা।

আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের চাকলা গ্রামের গোলাম রসুল বলেন, আম্পানের রাতে কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ ভেঙে তাদের গ্রাম তলিয়ে যায় তিন-চার ফুট পানির নিচে। বেড়িবাঁধ মেরামত না হওয়ায় এখনও নদী আর গ্রাম একাকার হয়ে আছে।

“বাড়িতে বইছে জোয়ার-ভাটা। প্রায় কোমরসমান পানিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।”

প্রতাপনগর ইউনিয়নের ‘১৫ থেকে ১৬টি গ্রাম লবণপানিতে সম্পূর্ণ তলিয়ে আছে’ বলে জানান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন।

তিনি বলেন, তার ইউনিনের চাকলা, প্রতাপনগর, কুড়িকাউনিয়া, কল্যাণপুর ও দিজলারাইট গ্রাসহ ১৫ থেকে ১৬ গ্রাম সম্পূর্ণ তলিয়ে আছে।

“কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধে বাঁশ ও বালির বস্তা দিয়ে পানি ঠেকানোর চেষ্টা করা হলেও তা কাজে আসছে না।”

উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের হাজরাখালী গ্রামের রুহুল আমীন সরদার বলেন, নদীতে জোয়ার উঠলে বাড়িতেও পানি বেড়ে যায়। চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে।

শ্রীউলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাকিল হোসেন জানান, তার ইউনিয়নের ২১টি গ্রামের মধ্যে ১৬টিতে এখনও পানি রয়েছে।

“আম্পানের রাতে খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে এসব গ্রাম তলিয়ে যায়। হাজার হাজার মানুষ কোমরসমান পানির মধ্যে বাস করছে।”

শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ বলেন, খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে তার ইউনিয়নের খেজুরহাটি, ঝাপালি, জয়নগর ও কাশিমাড়িসহ ছয়টি গ্রাম ডুবে আছে।

“এসব গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে।”

সরকারি হিসাব অনুযায়ী প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নে ৪২টি গ্রাম সম্পূর্ণ পানির নিচে তলিয়ে আছে।

আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর আলিফ রেজা বলেন, প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নের ৪২টি গ্রামের ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। খোলপেটুয়া ও কপোতাক্ষ নদের ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ মেরামত না হওয়া পর্যন্ত এসব মানুষের দুর্ভোগ কমবে না।

বাঁধ সংস্কারের জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।