নিহত মুক্তার মোল্যার ভাই মোমরেজ মোল্যা বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে লোহাগড়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় নড়াইল জেলা পরিষদ সদস্য শেখ সুলতান মাহমুদ বিপ্লবসহ ৭৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
একই ঘটনায় পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে আরেকটি মামলা হয়েছে। পুলিশের এক এএসআইয়ের ভাই এই মামলা দায়ের করেন।
কাশিপুর ইউনিয়নের গন্ডব গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে সাবেক মিরাজ মোল্যা লোকজনের সঙ্গে নড়াইল জেলা পরিষদ সদস্য সুলতান মাহমুদ বিপ্লবের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
এর জের দুই পক্ষের সমর্থকরা বুধবার বিকাল ৩টার দিকে বিভিন্ন দেশি অস্ত্র নিয়ে গন্ডব গ্রামে সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ওই গ্রামের মুক্তার মোল্যা (৬০), তার ভাতিজা আমিনুর রহমান হাবিব (৫৫) এবং একই গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৩০) নিহত হন।
লোহাগড়া থানার ওসি সৈয়দ আশিকুর রহমান জানান, নিহত মুক্তার মোল্যার ভাই বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে নড়াইল জেলা পরিষদের সদস্য শেখ সুলতান মাহমুদ বিপ্লবসহ ৭৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ওসি জানান, এখন পর্যন্ত এজাহারভুক্ত পাঁচজনহ মোট ১৮ জনকে আটক করেছে লোহাগড়া থানা।
তবে রফিকুল মোল্যা হত্যার ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি বলে ওসি জানান।
স্থানীয়রা জানান, নড়াইল সদর হাসপাতালে তিন জনের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে লাশ বুঝে নেন নিহতদের স্বজনরা। এরপর নড়াইল সদর হাসপাতালের সামনে কয়েকশ নারী-পুরুষ খুনিদের বিচারের দাবিতে ঝাড়ু মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে সদর হাসপাতাল চত্বরে সমাবেশ করে।
সমাবেশে কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ও আব্দুল আলিমসহ কয়েকজন বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা ঘটনার জন্য জেলা পরিষদ সদস্য সুলতান মাহমুদ বিল্পবসহ দোষীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি করেন।
পরে তারা জেলা প্রশাসক আনজুমান আরার কাছে দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দেন।
এ ব্যাপারে কথা বলতে ডিআইজি (সিআইডি) শেখ নাজমুল আলমের মোবাইলে ফোন করলে তিনি কেটে দেন।
কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জেলা পরিষদ সদস্য সুলতান মাহমুদ বিল্পব ও তার সমর্থক বহিরাগত এবং এলাকার চিন্থিত সন্ত্রাসী এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
সুলতান মাহমুদ বিল্পব একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী বলে অভিযোগ করেন মতিয়ার রহমান।
এ ব্যাপারে কথা বলতে জেলা পরিষদ সদস্য সুলতান মাহমুদ বিল্পবের মোবাইলে ফোন করে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী যেই হোক তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। কোনো প্রকার সহিংস ঘটনা, ভাংচুর-লুটপাট যাতে না হয় সেজন্য এলাকার চারটি পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।