থমকে আছে আটঘর নৌকার হাট

করোনাভাইরাস মহামারীতে থমকে গেছে পিরোজপুরের আটঘর নৌকার হাট। ক্রেতা না থাকায় বিপাকে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন হাটে আসা বিক্রেতারা।

পলাশ রায় ঝালকাঠি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 June 2020, 09:16 AM
Updated : 13 June 2020, 09:16 AM

জেলার নেছারাবাদ উপজেলার আটঘর-কুড়িয়ানা ইউনিয়নের হাটটিতে বহু বছর ধরে এলাকার মানুষ বর্ষা মৌসুমের নৌকা কেনাবেচা করে জীবিকা চালান।

শুক্রবার হাটে গিয়ে দেখা গেছে, নৌকার ক্রেতা না থাকায় বিরস বদনে বসে আছেন বিক্রেতারা। এ অবস্থায় তারা জীবন-জীবিকার অনিশ্চয়তায় পড়েছেন।

নৌকার আড়তদার সঞ্জীব হাওলাদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তিনি প্রতিবছর পুঁজি খাটিয়ে মৌসুমজুড়ে পাঁচ শতাধিক নৌকা তৈরি করেন।  চার মাসে এই হাটে লাখখানেক নৌকা বেচাকেনা হয়। কিন্তু  মহামারীতে এ বছর নৌকার মৌসুম শুরু হলেও হাট প্রায় ক্রেতাশূন্য।

প্রতিটি নৌকা আড়াই থেকে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করেন জানিয়ে তিনি বলেন, এক-দেড় বছর টেকসই থাকে এসব নৌকা। মাছ ধরা, মাছের ঘেরের কাজসহ বিল অঞ্চলে ভাসমান হাট-বাজারে বেচাকেনা, যাতায়াত ইত্যাদি সব কাজে নৌকাই একমাত্র ভরসা।

ঝালকাঠি-পিরোজপুর ছাড়াও বরিশাল ও মাদারীপুর-ফরিদপুরের লোজজন এ হাটে এসে নৌকা কিনে নিয়ে যায়।

অমল কান্তি নামে একজন কাঠমিস্ত্রি বলেন, “প্রতিবছর জ্যৈষ্ঠ মাসে শুরু হয়ে হাট চলে ভাদ্র পর্যন্ত। চার মাস কাজ করে যে আয় হয় তা দিয়েই পুরো বছর চলে। এ বছর হাট শুরু হয়েছে দুই সপ্তাহ হল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে হাটে ক্রেতা নেই। তাই বেচাবিক্রিও নেই। এমন চলতে থাকলে এ বছর পথে নামতে হবে।”

আটঘর-কুড়িয়ানা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখর সিকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শত বছরের ঐতিহ্যবাহী হাটটি এ বছর ইজারা হয়েছে ২৫ লাখ টাকায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ায় হাটে ক্রেতা নেই। ব্যবসায়ী ছাড়াও এ বছর হাটের ইজারাদারকে লোকসান গুনতে হবে।”

ঝালকাঠি সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় হওয়ায় দুই জেলার মানুষই এ হাটের ওপর নির্ভরশীল। প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার নৌকাশিল্পের সঙ্গে জড়িত বলে জানান চেয়ারম্যান।

এ প্রসঙ্গ ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বলেন, নৌকাশিল্পের সঙ্গে জড়িতদের এই দুর্দিনে ঋণসহ সহযোগিতা দেওয়ার ব্যপারে চেষ্টা করা হবে।