জামালপুরে পিসিআর ল্যাব: চালুর পর ১৫ দিনেই মেশিন নষ্ট

করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তে জামালপুরে ল্যাব চালুর ১৫ দিনের মাথায় নষ্ট হয়ে গেছে পিসিআর মেশিন।

লুৎফর রহমান জামালপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 June 2020, 06:48 PM
Updated : 7 June 2020, 06:48 PM

২০১৬ সালে জার্মানি থেকে আমদানি করা এই মেশিন কয়েক হাত বদল হলেও কেউ এটা ব্যবহার করেনি। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবেই জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে স্থাপিত আরটি-পিসিআর ল্যাবে এটি প্রথম সচল করা হয়।

গত ১২ মে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিসিআর মেশিনটি নিয়ে এসে নমুনা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে এ ল্যাবের যাত্রা শুরু। উদ্বোধনের পর ১৫ দিনে ৮৬১টি নমুনা পরীক্ষাও করা হয়। তবে ২৭ মে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে বন্ধ হয়ে যায় সব পরীক্ষা। মাত্র ১৫ দিনেই পিসিআর মেশিন নষ্ট হওয়ায় এর মান নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ জানান, পিসিআর মেশিনটির রপ্তানিকারক জার্মানির কোম্পানিটির সাথে যোগাযোগ হচ্ছে।

২/৩ দিনের মধ্যে পিসিআর মেশিনটি চালু হবে বলে আশা করছেন তিনি।

২০১৬ সালে জার্মানির ‘এনালাইটিক্যাল জেনা’ নামে এক কোম্পানির কাছ থেকে বাংলাদেশের ইনভেন্ট টেকনোলজি লিমিটেড এই পিসিআর মেশিনটি আমদানি করে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারক কোম্পানির ব্যবস্থাপক সেলিম আল দ্বীন।

মেশিনটি তাদের কাছ থেকে অন্য একজন কেনে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের ওখানে ব্যবহার না হলেও পরে মেশিনটি হাতবদল হয়ে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়।

“সেখানেও এটা ব্যবহার করা হয়নি।”

করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য মেশিনটি চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজকে দেয়। সেখানে ১৫ দিন চলার পর মেশিনটিতে এ ত্রুটি ধরা পড়ে।

সেলিম বলেন, “আমাদের প্রকৌশলীরা চেষ্টা করেও ত্রুটি মুক্ত করতে পারেননি। মেশিনটি দীর্ঘদিন ব্যবহার না করায় তা নষ্ট হয়ে গেছে।”

এদিকে, জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের প্রকল্প পরিচালক ডা. মোশায়ের উল ইসলাম ও ল্যাব ইনচার্জ অধ্যাপক এ কে এম মুছা জানান, নতুন একটি পিসিআর মেশিনের জন্য পহেলা জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ডিজির কাছে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। নতুন মেশিন পাবার পর এই ল্যাবের কার্যক্রম শুরু হবে।

ডা. মোশায়ের উল ইসলাম বলেন, প্রকৌশলীরা পিসিআর মেশিনটির ত্রুটি সারাতে না পারায় মন্ত্রণালয়ের কাছে নতুন একটি পিসিআর মেশিন চাওয়া হয়েছে।

জামালপুরের সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাস বলেন, “এ ল্যাব সচল থাকলে নমুনা আরও বেশি পরীক্ষাসহ দ্রুত সময়ে রিপোর্ট দেওয়া যেত।”

জামালপুর জেলার ২৬ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে এ ল্যাব স্থাপন করা হয়। তবে ল্যাবটি বন্ধ থাকায় করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। এতে রিপোর্ট পেতে অতিরিক্ত সময় লাগছে।