কক্সবাজারের কয়েকটি উপজেলায়ও এবার ‘রেড জোন’

করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কক্সবাজার পৌরসভার পর কয়েকটি উপজেলা ও পৌরসভার বিভিন্ন এলাকাকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা দিয়ে অবরুদ্ধ করেছে প্রশাসন।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 June 2020, 10:55 AM
Updated : 7 June 2020, 10:55 AM

এলাকাগুলো হলো টেকনাফ পৌরসভা, চকরিয়া পৌর এলাকা ও ডুলাহাজারা ইউনিয়ন এবং উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের কোটবাজার স্টেশনের আশপাশের তিনটি ওয়ার্ড।

রোববার এ তথ্য জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত কমিটির সমন্বয়ক মো. আশরাফুল আফসার। 

এর আগের ঘোষণায় শনিবার থেকে কক্সবাজার পৌর এলাকাকে দেশের প্রথম ‘রেড জোন’ ঘোষণা করে ফের অবরুদ্ধ করা হয়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আশরাফুল জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে জেলার কয়েকটি এলাকাকে ঝূঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। প্রাথমিকভাবে প্রশাসন এসব এলাকাকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা দিয়ে ‘লকডাউন’ করেছে।

তিনি জানান, আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর হার বিবেচনায় কক্সবাজার পৌর এলাকাকে দেশের প্রথম রেড জোন ঘোষণা দিয়ে শনিবার থেকে অবরুদ্ধ করেছিল। পাশাপাশি এ নিয়ে প্রশাসন জেলার আরও কয়েকটি এলাকাকে ঝূঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে।

“প্রাথমিকভাবে এসব ঝূঁকিপূর্ণ এলাকার মধ্যে রয়েছে চকরিয়া পৌর এলাকা ও ডুলাহাজারা ইউনিয়ন, টেকনাফ পৌর এলাকা এবং উখিয়ার রত্নাপালং ইউনিয়নের কোটবাজার স্টেশন সংলগ্ন আশপাশের তিনটি ওয়ার্ড।”

আশরাফুল বলেন, রোববার সকাল থেকে জেলার ঝূঁকিপূর্ণ এসব এলাকাকে নতুন করে রেড জোন ঘোষণা দিয়ে অবরুদ্ধ করেছে প্রশাসন। আগামী ২১ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত পর্যন্ত এসব এলাকা লকডাউনের আওতায় থাকবে।”

“লকডাউনের আওতায় থাকা এসব এলাকায় ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিকসহ সবধরনের সভা-সমাবেশ বা গণজমায়েত বন্ধ থাকার পাশাপাশি কাঁচা বাজার, মুদি দোকান, মার্কেট ও বিপণি বিতান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে প্রশাসন। বন্ধ থাকবে ব্যক্তিগত ও যেকোনো ধরনের গণপরিবহন। এ সময় মানুষকে ঘরে অবস্থানেরও নির্দেশনা রয়েছে।”

আশরাফ বলেন, শুধু ফার্মেসিসহ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও পরিবহন, কোভিড-১৯ মোকাবিলার কাজে ব্যবহৃত গাড়ি চলাচল করতে পারবে। এছাড়া সপ্তাহের রোববার ও বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে খোলা থাকবে কাঁচা বাজার ও মুদি দোকানসহ নিত্যপণ্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো।

রেড জোন ঘোষিত এসব এলাকায় ইউএনওরা শনিবার রাতে এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছেন বলে আশরাফ জানান।

কক্সবাজার পৌর এলাকায় বিধিনিষেধ লংঘন

এদিকে কক্সবাজার পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় রোববার যানবাহন ও মানুষের চলাচলসহ স্বাস্থ্যবিধি লংঘনের চিত্র দেখা গেছে। কিছু দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার পাশাপাশি ফুটপাতে হকারও দেখা গেছে।

বিধিনিষেধ লংঘনকারীদের বিরুদ্ধে শহরের কয়েকটি স্থানে পুলিশের কিছুসংখ্যক সদস্যকে তৎপর দেখা গেলেও অন্যান্য স্থানে তেমন তৎপরতার চোখে পড়েনি।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আশরাফুল আফসার বলেন, প্রশাসনের নির্দেশনা মতো রোববার ‘লকডাউনের কিছুটা শিথিলতা’ থাকায় রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল বেড়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠে রয়েছে নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

তারপরও লকডাউনের নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে সোমবার থেকে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলে জানান তিনি।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, জেলায় শনিবার পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে ৯৬৪ জন। এদের মধ্যে দেশে প্রথম ‘রেড জোন’ ঘোষিত কক্সবাজার পৌর এলাকার ৩১৭ জন। জেলায় আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। এর মধ্যে কক্সবাজার পৌর এলাকার রয়েছে ১৩ জন।