নীলফামারীর মিনা হত্যা: প্রধান আসামি শ্বশুরও গ্রেপ্তার

নীলফামারী সদরে খ্রিষ্টান গৃহবধূ মিনা ঋষি হত্যার প্রধান আসামি তার শ্বশুর গণেশ ঋষিকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এর আগে মিনার স্বামীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 June 2020, 01:27 PM
Updated : 6 June 2020, 01:27 PM

সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহমুদ উন নবী জানান, শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া গ্রামের বাদিয়াপাড়া মহল্লা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার গণেশ ঋষি (৪৫) সদর উপজেলার খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের হালিরবাজার মাস্টারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। শনিবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, গত ২৭ মে রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন মিনা ঋষি (২০)। পরদিন সকালে বাড়ির অদূরে হালিরবাজা সংলগ্ন এম ইউ উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনের এক পানিশূন্য ডোবায় মিনার অর্ধনগ্ন মরদেহ পাওয়া যায়।

সদর থানার ওসি মমিনুল ইসলাম জানান, ২৮ মে নিহতের ভাই সুকুমার ঋষি বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় মীনার স্বামী, সৎ শাশুড়ি ও চাচি শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

গ্রেপ্তারদের দেওয়া বক্তব্যের বরাতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মাহমুদ উন নবী জানান, গণেশের নির্দেশে মিনার হাত-পা চেপে ধরেন স্বামী তিমোথিও, সৎ শাশুরি শিউলী রানী ও চাচি শাশুরি মিনতি রানী। আর মিনার গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন শ্বশুর গণেশ ঋষি। হত্যার পর মিনার মুখে ও যৌনাঙ্গে মাটি ঢুকিয়ে দিয়ে ওই হত্যাকাণ্ডকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেন তারা।

পুলিশের কাছে দেওয়া আসামিদের জবানবন্দি

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মাহমুদ উন নবী জানান, হিন্দু ধর্মের মেয়ে মিনা দুই বছর আগে খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারী তিমোথীয়োকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে মিনাকে বিভিন্ন সময় তার শ্বশুর গণেশ ঋষি কুপ্রস্তাব দিতেন বলে মিনা অভিযোগ করতেন। এনিয়ে প্রায় অশান্তি বিরাজ করত পরিবারে। এ কারণে মিনাকে তারা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত।

তিনি বলেন, এর জেরে ২৭ মে রাত ১১টার দিকে বাবার বাড়ি চলে যেত চাইলে স্বামীর পরিবারের লোকজন বাধা দেয়। এক পর্যায়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলে স্বামীর পরিবারের লোকজন বাড়ীর অদূরে হালীর বাজার সংলগ্ন এম ইউ উচ্চ বিদ্যালয়ের পিছনের ডোবার পাশে মিনাকে ধরে ফেলে।

মাহমুদ উন নবী বলেন, এ সময় শ্বশুর গণেশ ঋষির নির্দেশে মিনার হাতপা চেপে ধরে সৎ শাশুড়ি শিউলী রাণী, চাচি শাশুড়ি মিনতী রাণী ও স্বামী তিমোথীয়ো। এরপর গণেশ গলা ও মুখ চেপে ধরে মিনাকে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিতের পর ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য তার মুখে ও যৌনাঙ্গে মাটি ঢুকিয়ে মরেদহ অর্ধনগ্ন করে চলে যায় তারা।