পাবনায় ঘরের ভেতর স্বামী-স্ত্রী-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা

পাবনা সদর উপজেলায় এক বাড়ি থেকে পরিবারের তিন সদস্যের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পাবনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2020, 11:40 AM
Updated : 5 June 2020, 04:39 PM

সদর থানার ওসি নাসিম উদ্দিন জানান, শুক্রবার দুপুরে দিলালপুর এলাকায় নিজ বাড়িতে এই তিনজনের মরদেহ পাওয়া যায়।   

এরা হলেন রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার (৬৫), তার স্ত্রী ছুম্মা খাতুন (৬০) ও মেয়ে সানজিদা খাতুন জয়া (১৪)।

এই ঘটনায় রাব্বি নামের সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে, যাকে নিহত আব্দুল জব্বারের দত্তক পুত্র বলছে পুলিশ।

ওসি নাসিম উদ্দিন জানান, ধারণা করা হচ্ছে ৩/৪ দিন আগে দুর্বৃত্তরা তিনজনকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। মরদেহে কিছুটা পচন ধরেছে এবং তা থেকে গন্ধ বেরিয়েছে। তাদের ঘরের কক্ষগুলো তছনছ করা এবং আলমারি ভাঙা পাওয়া গেছে।

গোয়েন্দা পুলিশ এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে রাব্বি নামের একজনকে আটক করেছে বলে ওসি জানান।

ওসি আরও জানান, “আব্দুল জব্বার দম্পতি নিঃসন্তান। তারা সানজিদা ও রাব্বিকে দত্তক নিয়েছিলেন। বখে যাওয়ায় কয়েক বছর আগে রাব্বিকে বাড়ি থেকে বের করে দেন বলে জানা গেছে।”

তবে নিহত আব্দুল জব্বারের ভাই মনিরুজ্জামান শুধু সানজিদাকে দত্তক নেওয়ার কথা জানান।

মনিরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভাই-ভাবি নিঃসন্তান ছিলেন। পরে সানজিদাকে দত্তক নিয়েছিলেন। আমার ভাই খুবই শান্ত প্রকতির লোক ছিলেন, কারোর সাথে ঝামেলায় যেতেন না। তাকে কারা এভাবে হত্যা করল!।

আব্দুল জব্বারের বোন নাজমা খাতুন বলেন, “শহরের শালগাড়িয়া মহল্লায় আমার ভাইয়ের একটি নিজস্ব বাড়ি আছে। তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে দিলালপুরে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। সম্পত্তির কারণে কেউ তাদের হত্যা করেছে বলে আমার ধারণা।”

পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, কী কারণে এবং কারা হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে উদঘাটন করা যাচ্ছে না। পুলিশ তদন্ত করছে। রাজশাহী থেকে পুলিশের একটি বিশেষ টিম এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও সুরহতাল দেখতে রওনা হয়েছে। আলামত যাতে নষ্ট না হয়, সেজন্য রাজশাহী থেকে টিম না আসা পর্যন্ত মরদেহ ওই বাড়িতেই থাকবে। পুলিশ বাড়িটি পাহারা দিচ্ছে এবং এলাকাটি ঘিরে রাখা হয়েছে।

“এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে একজনকে আটক করা হয়েছে। আমরা যেটুকু নিশ্চিত হতে পেরেছি তা হলো এটি ডাকাতি না। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত আর কিছুই বলা যাচ্ছে না।”

স্বজন ও প্রতিবেশীরা জানান, আব্দুল জব্বার পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কাশীনাথপুর ইউনিয়নের পাইকরহাটি গ্রামের মৃত আব্দুল মতিন শেখের ছেলে। শহরের দিলালপুর এলাকায় পরিবার নিয়ে তিনি আমেরিকা প্রবাসী এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। মেয়ে সানজিদা খাতুন জয়া পাবনা শহরের কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ বিকাল ৩টার দিকে ওই বাড়ির নিচতলার একটি কক্ষ থেকে আব্দুর জব্বার ও তার স্ত্রী এবং আরেকটি কক্ষ থেকে সানজিদার মরদেহ উদ্ধার করে।