উপজেলার বামনডাঙ্গা গ্রামের নিহত সুজন মৃধার বাবা কাবুল মৃধা বাদী হয়ে সোমবার মুকসুদপুর থানায় এ মামলা দায়ের করেন বলে ওসি মীর্জা আবুল কালাম আজাদ জানান।
আসামিরা হলেন- মুকসুদপুরের সুন্দরদী গ্রামের ওসমান শেখের ছেলে লিয়াকত শেখ ওরফে লেকু শেখ (৪৫), একই উপজেলার যাত্রাবাড়ী গ্রামের রজব আলী মোড়লের ছেলে রব মোড়ল (৪৫) ও মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার সত্যবর্তী গ্রামের আ. মজিদ সরদারের ছেলে জুলহাস সরদার।
এর আগে মাদারীপুরের তিন পরিবারের করা মামলায় জুলহাস সরদারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ত্রিপলি থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণের শহর মিজদাহতে পাচারকারীদের মাধ্যমে দেশান্তরি হওয়া একদল বাংলাদেশি ও আফ্রিকান গত ২৮ মে লিবিয়ার মিলিশিয়া বাহিনীর হাতে জিম্মি হয়। তখন পাচারকারীরা আরও টাকা দাবি করে।
এ নিয়ে বচসার মধ্যে আফ্রিকার মূল পাচারকারীকে মেরে ফেলা হলে তার পরিবার এবং বাকি পাচারকারীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ২৬ বাংলাদেশিসহ ৩০ জনকে হত্যা করে, আরও ১১ জন আহত হন।
মামলার বাদী কাবুল মৃধা তার অভিযোগে বলেন, তার ছেলে সুজন ও ভাগ্নে কামরুল শেখ এবং মুকসুদপুর উপজেলার সুন্দরদি গ্রামের কালাম শেখের ছেলে ওমর শেখকে লিবিয়া পাঠিয়ে ভালো বেতনে চাকরির ‘প্রলোভন’ দেখান স্থানীয় দালাল রব মোড়ল। সেজন্য সুজন ও কামরুলের কাছে ৮ লাখ টাকা বরে এবং ওমর শেখের কাছে ৪ লাখ টাকা দাবি করেন তিনি।
“সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে ১৫ জানুয়ারি কাবুল মৃধা ২ লাখ ৫০ হাজার এবং কালাম শেখ ৫০ হাজার টাকা রবকে দেন। পরে রব সেই টানা পৌঁছে দেন অপর দুই আসামি লেকু শেখ ও জুলহাসের কাছে।”
কিন্তু লিবিয়া যাওয়ার পর চাকরি দেওয়ার বদলে বেনগাজীর মিজদাহ শহরে সুজন, কামরুল ও ওমরকে আটকে রেখে মুক্তিপণের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা শুরু করা হয় অভিযোগ করেছেন কাবুল মৃধা।
তিনি বলেন, দালাল চক্রটি তিন পরিবারের কাছে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। নির্যাতনের সময় শব্দ ধারণ করে তা ভয়েস ম্যাসেজ আকারে পাঠানো হয় তিন পরিবারের কাছে।
“নির্যাতনের বিষয়টি লেকু, রব ও জুলহাসকে জানালে তারা বলে, টাকা না দিলে তারা কিছুই করতে পারবে না। এরপর ২৮ মে সুজন ও কামরুল গুলি করে হত্যা করা হয় এবং ওমর গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হয়।”
ওসি মীর্জা আজাদ বলেন, মামলা হওয়ার পরপরই পুলিশ দুই আসামির বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে; তারা পলাতক রয়েছে।
দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ কাজ করছে বলে জানান তিনি।