বগুড়া স্টেডিয়াম পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জাহাঙ্গীর আলম জানান, সোমবার কামারগাড়ী এলাকায় মুন্নুজান ছাত্রী নিবাসের ১৩ জন ছাত্রী জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ি যেতে চাইলে ছাত্রী নিবাস কর্তৃপক্ষ বাধা দেয়। এতে দুপক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
গত ১৭ মে এই এলাকায় একই ধরনের আরেকটি ঘটনা ঘটে শিউলী ছাত্রীনিবাসে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, খবর পেয়ে পুলিশসহ গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে ছাত্রী এবং অভিভাবকদের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে ছাত্রীনিবাসের সুপার হাফিজা বেগমের কথা কাটাকাটি চলছে।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পর ১৩ জন ছাত্রী ছাত্রীনিবাস থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা দেন।
মুন্নুজান ছাত্রী নিবাসে থেকে বগুড়ার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তিন শতাধিক ছাত্রী পড়ালেখা করেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
ওই ছাত্রী নিবাসের বাসিন্দা সরকারি আজিজুল হক কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শেষ বর্ষের ছাত্রী বগুড়ার শিবগঞ্জের মোছা. রুমা বলেন, সোমবার ওই হোস্টেলে তিনিসহ ১৩ জন ছাত্রী আসেন। তিনি কক্ষে গিয়ে দেখেন সবকিছু তছনছ অবস্থা। জামাকাপড়সহ দামী জিনিসপত্র চুরি হয়ে গেছে।
তার কক্ষের মতো আরেকজনের কক্ষও চুরি হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যেখানে রুমে চুরি হয় সেখানে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়! তারপরও হোস্টেলের ইনচার্জ তিন মাসের ভাড়া পরিশোধ করে হোস্টেল ত্যাগ করতে বলে।”
সিরাজগঞ্জের দীপান্বিতা এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের ছুটিতে তিনি বাড়ি চলে যান। ছাত্রী নিবাসে তার বইপত্র নিতে এসেছিলেন। কিন্তু তিন মাসের ভাড়া ছাড়া তাকে বের হতে বাধা দেয়।
তিনি বলেন, “গরমের সময় প্রায়ই নিচতলায় সাপ দেখা যায়। হোস্টেলের সবাই আতঙ্কে থাকে।”
সরকারি আজিজুল হক কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী সিরাজগঞ্জের রিফাত জাহান বলেন, “তিন মাসের ভাড়া ছাড়া হোস্টেল থেকে বের হতে বাধা সৃষ্টি করেছে হোস্টেল সুপার। ভ্যানিটি ব্যাগ পর্যন্ত তল্লাশি করেছে যেন আমরা আমাদের সার্টিফিকেট নিয়ে বের হতে না পারি।”
প্রতিটি ছাত্রীর কাছ থেকে একমাসের অগ্রিম ভাড়া মালিকপক্ষের কাছে জমা রয়েছে বলেও তিনি জানান।
মুন্নুজান ছাত্রীনিবাসের হোস্টেল সুপার হাফিজা বেগম বলেন, এপ্রিল থেকে তিন মাসের ভাড়া চাওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা দিতে রাজি হচ্ছে না। পরে মালিক আব্দুল্লাহেল কাফীর সঙ্গে কথা বললে দুই মাসের ভাড়া নিয়ে ছাত্রীদের ছেড়ে দিতে বলেন।
সাপের উপদ্রবের বিষয়ে তিনি বলেন, “মাঝেমাঝে সাপ বের হয়। তবে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করি।”
রুমে চুরি হওয়া এবং নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। ছাত্রীদের ব্যাগ তল্লাশি করার কথা তিনি অস্বীকার করেছেন।
এসআই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “ছাত্রী নিবাস মালিকের সঙ্গে কথা বলেছি। যার টাকা আছে সে দিয়ে যাবে। আর যার নাই সে পরে এসে দেবে। তবে টাকার জন্য কোনো ছাত্রীকে আটকে রাখতে পারবে না কর্তপক্ষ। ছাত্রীদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে ছাত্রীনিবাস ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। যদি তাতে বাধা দেয় তবে ওই ছাত্রী নিবাস কর্তপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।