লিবিয়ায় ২৬ হত্যা: পাচারের মামলায় মাদারীপুরে গ্রেপ্তার ২

লিবিয়ায় নিহত ২৬ বাংলাদেশির মধ্যে মাদারীপুরের তিন পরিবারের করা মামলায় এক নারীসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মাদারীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 June 2020, 09:42 AM
Updated : 1 June 2020, 10:34 AM

গ্রেপ্তার দুজন হলেন রাজৈর উপজেলার জুলহাস সরদার এবং মাদারীপুর সদর উপজেলার দিনা বেগম। তাদের মধ্যে জুলহাসের করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকায় তাকে পুলিশি হেফাজতে মাদারীপুর সদর হাসাপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

গত ২৮ মে লিবিয়ার ত্রিপলি থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণের শহর মিজদাহতে ২৬ বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করে একদল মানব পাচারকারী ও তাদের স্বজনরা। ওই ঘটনায় চার আফ্রিকান অভিবাসীও নিহত হন।

ওই ঘটনায় নিহত মাদারীপুরের তিনজনের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মোট ১৪ জনকে আসামি করে তিনটি মামলা করা হয়। তাদের মধ্যেই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে রাজৈর ও সদর মডেল থানার ওসি জানিয়েছেন।

ওই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একজনের বরাতে সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উন্নত জীবিকার সন্ধানে ইউরোপ যাওয়ার জন্য লিবিয়ায় দুর্গম পথ পাড়ি দিচ্ছিলেন ৩৮ বাংলাদেশি। বেনগাজি থেকে মরুভূমি পাড়ি দিয়ে মানবপাচারকারীরা তাদের ত্রিপোলি নিয়ে যাচ্ছিল।

বৃহস্পতিবার ত্রিপলি থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণের শহর মিজদাহতে ওই দলটি লিবিয়ার মিলিশিয়া বাহিনীর হাতে জিম্মি হয়। তখন পাচারকারীরা আরও টাকা দাবি করে।

এ নিয়ে বচসার মধ্যে আফ্রিকার মূল পাচারকারীকে মেরে ফেলা হলে তার পরিবার এবং বাকি পাচারকারীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ৩০ জনকে হত্যা করে, আরও ১১ জন আহত হন।

রা‌জৈর থানার ওসি মো. শওকত জাহান ব‌লেন, লিবিয়ায় ২৬ বংলাদেশিকে হত্যার খবর পেয়ে এলাকাবাসী স্থানীয় দালাল জুলহাসের বাড়ি ঘেরাও করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ জুলহাসকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।

“এ সময় জুলহাস জানায় যে সে করোনাভাইস পরীক্ষা করতে দিয়েছেন। তাই তাকে জেলাহাজতে না নিয়ে মাদারীপুর সদর হাসাপাতালে আইশোলেশনে রাখা হয়।”

পরে লিবিয়ায় নিহত জুয়েলের বাবা রাজ্জাক হাওলাদার বাদী হয়ে দালাল জুলহাস সরদারসহ ৪ জনের নামে মানব পাচার আইনে শুক্রবার মামলা করেন। আর শ‌নিবার রাজৈর থানার বদরপাশা ইউনিয়নের নিহত রহিম খালাসীর ভাই আবু সাইদ খালাসী বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেন। জুলহাস ওই দুই মামলারই আসামি।

মাদারীপুর সদর ম‌ডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, লিবিয়ায় নিহত দুধখালি ইউনিয়নের মো. শামিমের বাবা আব্দুল হালিম মিয়া বাদী হয়ে রোববার একটি মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলায় দালাল নজরুল ইসলামসহ তিনজনকে আসামি করা হয়। পরে রোববার রাতেই মামলার আসামি নজরুলের স্ত্রী দিনা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান ওসি।