স্বাস্থ্যবিধি: চাঁদপুর লঞ্চঘাটে সব চেষ্টাই ব্যর্থ

স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ কিংবা যাত্রীদের মধ্যে দূরত্ব রক্ষার কোনো চেষ্টাই কাজে আসছে না চাঁদপুর লঞ্চঘাটে।

চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 June 2020, 06:12 AM
Updated : 1 June 2020, 06:33 AM

লঞ্চ চলাচল শুরুর পর দ্বিতীয় দিন সোমবার সকালের ভাগে কর্তৃপক্ষ সব নিয়ম মেনে লঞ্চ ছাড়ার চেষ্টা করলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীর চাপ বাড়তে থাকায় কোনো নিয়মই আর কার্যকর থাকেনি। 

ঘাটে দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিএর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা আবুল বাশার মজুমদার বলেন, “যাত্রীদের নিয়ন্ত্রণ করতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি।”

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে চলা লকডাউন ওঠার হওয়ার পর রোববার থেকে অফিস খোলার পাশাপাশি যানবাহন চলাচালের অনুমতি দেয় সরকার। কিন্তু শর্ত ছিল, কোনো বাহনে ধারণক্ষমতার অর্ধেকের বেশি যাত্রী তোলা যাবে না, মেনে চলতে হবে করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার স্বাস্থ্যবিধি এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়ম।

চাঁদপুর থেকে লঞ্চ চলাচল শুরুর পর রোববার ঘাটে অনেক যাত্রীর মধ্যে সেসব নিয়ম মেনে চলতে অনিহা দেখা যায়। ঘাটে অব্যবস্থাপনার দায়ে বিআইডব্লিউটিএর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাককে সাময়িক বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ।

সে কারণে সোমবার সকাল থেকেই কর্তৃপক্ষ ঠিকঠাক নিয়ম অনুসরণ করে যাত্রী তোলার চেষ্টা করছিল। তাতে দিনের শুরুতে ঘাটে যাত্রীদের লাইন প্রায় আধা কিলোমটার ছাড়িয়ে যায়। তবে তখনও তাদের দূরত্বের নিয়ম মানতে দেখা গিয়েছিল।

যাত্রীরা লঞ্চে ঢোকার সময় জীবাণুনাশক স্প্রে ছিটানো হচ্ছিল। লঞ্চে বসার ক্ষেত্রেও দূরত্ব রাখার চেষ্টা দেখা যাচ্ছিল।

ওই পরিস্থিতির মধ্যে সকাল ৬টায় এমভি রফ রফ-২, সকাল ৭টায় এমভি সোনার তরী ও সকাল ৮টায় এমভি ঈগল-৭ ঢাকার উদ্দশ্যে ছেড়ে যায়।

চাঁদপুরের বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা হিসেবে রোববার বিকালে যোগ দেওয়া আবুল বাশার মজুমজার তখন বলেন, “আমরা ঘাটে যাত্রীদের নিরাপত্তায় ব্যাপক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। প্রতিটি লঞ্চে জীবাণুনাশক স্প্রে প্রদান করা হচ্ছে। যাত্রীদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে। এক সিট ফাঁকা রেখে যাত্রীদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

কিন্তু এরপর যাত্রী বাড়তে থাকলে সব ভেঙে পড়ে। ঘাটের টিকেট কাউন্টারে শত শত মানুষকে গায়ে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। বেলা ১১টায় এমভি রফ রফ-৭ লঞ্চে দেখা যায় মানুষের উপচেপড়া ভিড়। ঠেলে, ধাক্কা দিয়ে যে যেভাবে পারেন লঞ্চে ওঠার চেষ্টায় ব্যস্ত।

সকালে যাত্রী ওঠার সময় জীবাণুনাশক স্প্রে করার যে দৃশ্য দেখা গিয়েছিল, পরে যাত্রীদের হুড়োহুড়ির মধ্যে সেই চেষ্টাও আর দেখা যায়নি। যাত্রীরদের বেশিরভাগের সঙ্গে মাস্ক থাকলেও অনেকেই তা খুলে বা মুখ থেকে সরিয়ে রেখেছিলেন।

হান্নান নামের এক লঞ্চ যাত্রী বলেন, “জীবিকার প্রয়োজনে ঢাকায় যেতে হবে। ঘাটে প্রচুর ভিড়। এই ঝুঁকির মধ্যেই যাত্রীরা লঞ্চে উঠছে। কোনোভাবেই দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না।”

বিআইডব্লিউটিএর পরিবহন কর্মকর্তা আবুল বাশার মজুমদার বলেন, “লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দূরত্ব বজায় না রেখে লঞ্চে উঠছে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু ঘাটে প্রচুর যাত্রী থাকায় আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।”