বসেছে পদ্মা সেতুর ৩০তম স্প্যান, ৪৫০০ মিটার দৃশ্যমান

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে পদ্মা সেতুর ৩০তম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে ৪ হাজার ৫০০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে।

শরীয়তপুর প্রতিনিধিমুন্সীগঞ্জ ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2020, 06:29 AM
Updated : 30 May 2020, 08:00 AM

শনিবার সকালে সেতুর জাজিরা প্রান্তের ২৬ ও ২৭ নম্বর খুঁটর ওপর ‘৫বি’ নম্বর স্প্যানটি বসানো হয় বলে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের জানান।

তিনি বলেন, “পদ্মা সেতুর ২৬ ও ২৭ নম্বর খুঁটি এলাকায় শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ফেরি রুটের চ্যানেল ছিল। সে কারণেই এই দুটি খুঁটি নির্মাণে বিলম্ব হয়েছে। ড্রেজিং করে পাশ দিয়ে চ্যানেল করে দিয়ে খুঁটি দুটি তৈরি করা হয়।”

আগামী ২০ জুন সেতুর ৩১ তম স্প্যান বসনোর সিডিউল ঘোষণা করা হয়েছে; এটি বসবে ২৫ ও ২৬ নম্বর খুঁটিতে। এই ৩০ ও ৩১ তম স্প্যান স্থাপনের মধ্য দিয়ে সেতুটি সরাসরি জাজিরা প্রান্ত থেকে মাওয়ার অংশ স্পর্শ করবে।”

প্রকৌশলী দেওয়ান বলেন, “৩১ তম স্প্যান বসলে জাজিরার অংশে আর কোন স্প্যান বসানো বাকি থাকবে না। আর মাওয়া অংশে স্প্যান বসানো বাকি থাকছে ১০টি। সেগুলো বসানো সম্পন্ন হলে সেতুর পূর্ণ অংশ ৬.১৫ কিলোমিটার দৃশ্যমান হবে।” 

এর আগে শুক্রবার সকালে মাওয়া প্রান্তের কুমারভোগ ইয়ার্ড থেকে ৩ হাজার ১৫০ মে. টন ওজনের ‘৫বি’ নম্বর স্প্যান ভাসমান ক্রেনে করে নিয়ে যাওয়া হয় খুঁটির কাছে। পরে স্প্যানটি প্লেস করে রাখা হয়। স্প্যানটি খুঁটিতে বসানোর জন্য আগেই ২৭ নম্বর খুঁটিতে লিফটিং ফ্রেম (স্প্যানকে ঝুলিয়ে রাখার যন্ত্র) স্থাপন করা হয়েছিল বলে জানান তিনি। 

পদ্মাসেতু বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর জানান, করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্য পদ্মাসেতুর ৩০ তম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে ৪ হাজার ৫০০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে। এখন বাকি থাকল ১১টি স্প্যান বা দেড় কিলোমিটারের একটু বেশি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনার মধ্যে ও পদ্মাসেতুর কাজ এগিয়ে চলছে। এতে পদ্মার পাড়ের মানুষ মানুষ খুশি।

তিনি বলেন, “করোনাভাইরাসের কারণে পদ্মাসেতুর কাজে তেমন কোন অসুবিধা হয়নি। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে পুরো প্রকল্পটি আইসোলেটেড রাখা হয়েছে। তাই এখানকার দেশী বিদেশী কর্মীরা অনেকটা নিরাপদ। এখানে নিরাপদ দুরত্বে অবস্থান করে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে না। বাইরের কাউকেই এখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।”

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যর সেতুটি দ্বিতল হবে, যার ওপর দিয়ে সড়কপথ ও নিচের অংশে থাকবে রেলপথ। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে মূল সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২১ সালে মাঝামাঝি। মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। আর নদীশাসনের কাজ করছে চীনের সিনো হাইড্রো করপোরেশন।

জাজিরার মঙ্গল মাঝির ঘাটের নুরে আলম মাদবর বলেন, “ধীরে ধীরে পদ্মাসেতুর কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। ৩০ তম স্প্যান বসছে দেখে খুশি হলাম। পদ্মাসেতু ২০২১ সালের মধ্যে যানবাহন চলাচলের উপযোগী হবে আশা করছি।”