পথেই হলো তাদের ঈদ

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যে বগুড়ায় দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ঈদ কেটেছে পথে, রাস্তার মোড়ে কিংবা মসজিদ ফটকে।

জিয়া শাহীন বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 May 2020, 07:10 PM
Updated : 25 May 2020, 07:12 PM

সোমবার ঈদের সকালে বগুড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। কেউ রাস্তার মোড়ে, কেউ মসজিদের ফটকে, কেউবা টহলে দায়িত্ব পালন করছিলেন। 

পুলিশের পাশাপাশি, র‌্যাব ও সেনাসদস্যদেরও এদিন একইভাবে দায়িত্বে দেখা গেছে।

বগুড়ার টেম্পল রোডে কথা হলো রাজশাহীর আলমগীর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সেলিম ও রুবেল নামের পুলিশ সদস্যের সঙ্গে।

তারা জানান, করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ডিউটি; ছুটি বাতিল। অন্য অফিসগুলোও বন্ধ; কিন্তু তারা ডিউটিতে নেই।

আলমগীর বলেন, “আমরা কিন্তু দিনরাত রাস্তায় পড়ে আছি। ঈদের দিনটি কীভাবে কাটল বুঝতে পারলাম না। সবাই যখন বাসা থেকে ঈদের নামাজে যাচ্ছে আমরা তখন পথে পথে ডিউটিতে। স্ত্রী-সন্তান এখানে থাকলেও একসঙ্গে পোলাও নাস্তা খাওয়ার ভাগ্য হলো না।”

বগুড়া জিলা স্কুলের সামনে কর্তব্য পালনে ছিলেন পাবনার নাজমুল, সিরাজগঞ্জের রায়হানসহ কয়েকজন।

তারা জানান, প্রতি ঈদে অর্ধেক লোসক ছুটিতে গ্রামের বাড়ি যান। পরে ঈদুল আজহাতে বানিরা যান। কিন্তু এবার কেউ যেতে পারেননি। গ্রামের বাড়ি থেকে বাবা-মা, স্ত্রী ফোন দিয়েছিলেন।

নাজুমুল বলেন, “বাড়ির লোকদের বলেছি ছুটি নেই। কোরবানীততেও কী হয় বলতে পারব না। প্রচণ্ড মনের কষ্টে আছি। ছেলে-মেয়েকে ছেড়ে একা ঈদে পড়ে থাকার বেদনা কে বুঝবে!”

বগুড়ার ধুনট থানার ওসি তদন্ত মিজানুর রহমান বলেন, কনস্টেবল থেকে অফিসার সবাই সকাল থেকে মাঠে ডিউটিতে। ধুনট সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের মসজিদে ঈদের জামাত ও অন্যান্য জায়গায় ডিউটিতে ছিলেন।

জেলা স্পেশাল ব্রাঞ্চের (ডিএসবি) পরিদর্শক আশিকুর রহমান আশীক বলেন, জেলায় দুই হাজারের বেমি মসজিদে ঈদের জামাতে পুলিশকে নজরদারি করতে হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বগুড়া জেলায় দুই হাজার পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাস মহামারী শুরু পর থেকেই ডিউটি করছে অবিরাম।

“এর মধ্যে ২৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। অনেক সদস্য হোম কোয়ারেন্টিনে। বাকিরা মাঠে ডিউটিতে। ঈদ করতে না পারলেও ডিউটিতে অনীহা নেই কারো। পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে সব অফিসার ঈদের দিনের মাঠে আছেন।”