ঈদের দিন সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে পর ওই নারীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
প্রসূতি রাশেদা বেগম (৩৫) সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের জামুডাঙ্গা (বাঁধের মাথা) গ্রামের দরিদ্র বাদশা মিয়ার স্ত্রী।
বাদশা মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, বিকালে তার স্ত্রীর প্রসব বেদনা উঠলে একটি ব্যাটারি চালিত রিকশা ভ্যানযোগে তাকে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। ওই সময় দায়িত্বরত সেবিকা বাসনা রাণী তাকে ভর্তি না করিয়ে গাইবান্ধা শহরে নিয়ে যেতে বলেন। বার বার অনুরোধ করলে বাসনা কর্ণপাত করেননি।
“পরে নিরুপায় হয়ে গাইবান্ধায় নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন। এ সময় রাশেদা ব্যথায় চিৎকার করতে থাকে। তখন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ফটকেই তার ছেলের জন্ম হয়।”
উপজেলার ৯ নম্বর বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহীন সরকার বলেন, প্রসূতি মায়ের প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকলে উৎসুক জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে হাসপাতাল ঘেরাও করে। পরে বাধ্য হয়ে কর্তৃপক্ষ তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। কিন্তু রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় রাত সাড়ে ৮টায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
সেবিকা বাসনা রাণী বলেন, “ওই প্রসুতি মায়ের সন্তান প্রসবের জন্য বাড়িতেও চেষ্টা করা হয়েছিল। ফলে রোগীর অবস্থা খারাপ ছিল। তাই তাকে গাইবান্ধা রেফার্ড করা হয়েছে।”
সাদুল্লাপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফজলুল কাফি মাসুম বলেন, “এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক-কর্মচারীরা এ ধরনের ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটিয়ে থাকেন। নগদ টাকা দাবি করে না পেলে তারা রোগী (প্রসুতি মা) না দেখেই জেলা শহরের ক্লিনিকগুলোতে যাওয়ার পরামর্শ দেন।”
এ ব্যাপারে স্থানীয় সমাজসেবক প্রভাষক মাহমুদুল হক বলেন, “সরকারি বিধি অনুযায়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ক্যাম্পাসে অববস্থান করার কথা। কিন্তু এখানে অবস্থান না করে তিনি গাইবান্ধা শহরে থাকেন। ফলে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবস্থা হযবরল হয়ে পড়েছে। তাই এখনে নূন্যতম স্বাস্থ্য সেবা মেলে না।”
সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাহিনুল ইসলাম মন্ডল সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “বিষয়টি তদন্ত করে দায়িত্বরত চিকিৎসক ও সেবিকার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”