গাজীপুরে পোশাক শ্রমিকদের অবরোধ-অগ্নিসংযোগ, পুলিশের গুলি

গাজীপুরে বোনাস পরিশোধের দাবিতে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা দিনভর বিক্ষোভ, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। দুপুরে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধও করে।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2020, 06:47 PM
Updated : 23 May 2020, 06:47 PM

ঈদের দুদিন আগে শনিবার সদর উপজেলার বাঘেরবাজার এলাকায় প্যানউইন অ্যাপারেলস লিমিটেড নামের পোশাক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। 

গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান জানান, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের থামাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শটগানের গুলি ও টিয়ার গ্যাস শেল ছুড়েছে।

গাজীপুরে প্যানউইন অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকদের বিক্ষোভ

এতে কয়েকজন পুলিশ ও শ্রমিক আহত হয়েছে বলেও পুলিশ জানিয়েছে।

শ্রমিকদের বরাত দিয়ে পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, এই কারখানার শ্রমিকদের ঈদ বোনাস ও হাজিরা বোনাস পরিশোধের পূর্বনির্ধারিত দিন ছিল শনিবার। শ্রমিকরা সকালে কারখানায় এসে তাদের পাওনাদির জন্য অপেক্ষা করতে থাকে; কিন্তু সকাল ১০টা পর্যন্ত মালিকপক্ষের কোনো কর্মকর্তা কারখানায় আসেননি কিংবা শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের ব্যবস্থা করেননি।

“এক পর্যায়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে। কিছু শ্রমিক কারখানায় ভাংচুর চালায় এবং কারখানার বিভিন্ন মালামালে অগ্নিসংযোগ করে।”

গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার বলেন, বেলা ১২টার দিকে শ্রমিকরা কারখানা থেকে বের হয়ে পার্শ্ববর্তী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ ও বিক্ষোভ করতে থাকে। এতে মহাসড়কের উভয় দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

“শ্রমিক অসন্তোষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পুলিশ কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করার আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা দুপুর দেড়টার দিকে অবরোধ তুলে নিয়ে কারখানা এলাকায় অবস্থান নেয়।”

গাজীপুরে প্যানউইন অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকদের বিক্ষোভ

সুশান্ত সরকার বলেন, দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরও কর্তৃপক্ষের সাড়া কিংবা পাওনাদি না পেয়ে শ্রমিকরা বিকালে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে এক পরিদর্শকসহ পুলিশের কয়েক সদস্য আহত হন।

“পুলিশ তাদের ধাওয়া করলে দুপক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়; কয়েকজন আহত হয়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিকাল ৪টার দিকে শতাধিক রাউন্ড টিয়ার সেল ও শটগানের গুলি ছুড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে।”

সুশান্ত সরকার আরও বলেন, এদিকে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করে পুলিশ। আলোচনা শেষে রাতে কারখানা কর্তৃপক্ষ রোববার ২টার দিকে শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের আশ্বাস দিলে তারা কারখানা এলাকা ত্যাগ করে।