আম্পান ঝিনাইদহের ফসলের মাঠ তছনছ করে দিল

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পান দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা ঝিনাইদহের বোরো ধান ও রবিশস্যসহ বিভিন্ন ফসলের উপর তাণ্ডব চালিয়ে গেছে।

বিমল সাহা ঝিনাইদহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2020, 05:13 PM
Updated : 23 May 2020, 05:13 PM

জেলার হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের মধ্যে রয়েছে শাক-শবজি, ডাল, তিল, মরিচ, বোরো ধান, পানবরজ, কলা, ফুল, আম ও লিচু।

বুধবার বিকালে পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় আম্পান। রাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং রাতভর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম ও পশ্চিমের জেলাগুলোর উপর তাণ্ডব চালায়।

ঝড়ের তাণ্ডব মেহেরপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও রাজশাহীর আম ও লিচুর বাগান তছনছ করে দিয়ে গেছে।

এতে আম ও লিচু পাড়ার এই সময় শত শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগের ভাষ্য।

ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস বলেন, জেলায় দেড় হাজার হেক্টরের কলা, এক হাজার ২৫ হেক্টরের শাক-শবজি, এক হাজার ৯৫০ হেক্টরের মুগডাল, ২ হাজার ২০ হেক্টরের তিল, সাড়ে সাতশ হেক্টরের মরিচ, একশ হেক্টরের বোরো ধান, দেড় হাজার হেক্টরের পানবরজ, দুই হাজার ৮৭৫ হেক্টরের আম, ৪১৮ হেক্টরের লিচু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

“টাকার অংকে ফসলের ক্ষতি হয়েছে ৮৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।”

ফুল ও পাটের ক্ষতি দেখানো হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, “তবে ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও অনেক বেশি হবে।”   

হরিণাকুন্ডু উপজেলার কন্যাদহ গ্রামের চাষি আবদার আলি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার দেড় বিঘা পানবরজ বিধ্বস্ত হয়েছে। বরজে দুই লাখ টাকা মূল্যের পান ছিল। এখন বরজ আবার মেরামত করতে আরও দেড় লাখ টাকার খরচ হবে। 

“এছাড়া আড়াই বিঘা কলা ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। ক্ষেতের এক হাজার কলা গাছ ভেঙে পড়েছে। এতে আমার ক্ষতি হয়েছে কমপক্ষে তিন লাখ টাকা।” 

তার তিন বিঘা জমির বোরা ধানও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তিনি জানান।

মহেশপুর উপজেলার কাজীরবেড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম রেজা বলেন, তার ইউনিয়নের প্রতিটি চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

কাজীরবেড় গ্রামের শুধু একজন চাষির ১০ বিঘা জমির কলা ক্ষেত বিধ্বস্ত হয়েছে এবং পানিতে মাছের খামার ভেসে গেছে বলে সেলিম রেজা জানান।    

শৈলকুপা উপজেলার ব্রহ্মপুর গ্রামের চাষি মফিজুল ইসলাম বলেন, ঝড়ের ঝাপটায় পাট গাছের কচি ডগাগুলো ভেঙে গেছে এবং গাছ মাটিতে পড়ে গেছে। 

কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর গ্রামের ফুলচাষি টিপু সুলতান বলেন, তিনি ১৬ বিঘা জমিতে ফুল চাষ করেছেন। এর মধ্যে তিন বিঘা জমির জারবেরা ফুল ক্ষেত একেবারে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। অন্যান্য ফুলেরও ক্ষতি হয়েছে।

ঝড়ে তার ১২ লাখ টাকার ফুল নষ্ট হয়েছে বলে তার ভাষ্য।