‘রোজা শেষে দুটো ভাত খাব, তাও আন্দারে খাতি হবে’

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে যশোরের শার্শা উপজেলার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা।

আসাদুজ্জামান আসাদ, বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2020, 09:20 AM
Updated : 22 May 2020, 09:20 AM

রাতে আলো জ্বালানোর জন্য মানুষ দোকানে দোকানে ঘুরে ফিরছে হারিকেন, ল্যাম্প, কেরোসিন ও মোমবাতির জন্য। কোথাও মিলছে না আলো জ্বালানোর কোনো উপকরণ। কারণ এসবের চাহিদা নেই। অনেক দিন ধরেই মানুষ লোডশেডিংয়ের সময় চার্জার লাইট ব্যবহার করে।

কিন্তু আম্পানের তাণ্ডবে বুধবার রাতে এ উপজেলায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এখন কোনো উপায় দেখতে পাচ্ছে না এ এলাকার বিদ্যুৎ গ্রাহকরা।

উপজেলার জামতলা বাজারের মুদি দোকানি আইজুল ইসলাম বলেন, “এখন তো আর কেউ হারিকেন জ্বালায় না। তাই কেউ দোকানে রাখে না। মোমবাতি যা ছিল তা মুহূর্তের মধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে।”

বিভিন্ন এলাকার মানুষের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোমবাতি সংগ্রহ করতে পেরেছেন কোনো কোনো এলাকার দুই-একজন। অন্য প্রায় সবাই নিরুপায়।

জামতলার মতিয়ার রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একদিকে আম্পান আমাদের নিঃস্ব করে দিয়ে গেছে। বাড়িঘর সব ভেঙে গেছে। এখন রোজার মাসে রাতে দুটো ভাত খাব, তাও আন্দারে খাতি হবে। হারিকেন, ল্যাম্প কিছু খুঁজে পালাম না। কোনো দোকানে মোমবাতিও পালাম না।”

এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা কবে নাগাদ স্বাভাবিক হবে তাও বলতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।

যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাগআঁচড়া আঞ্চলিক দপ্তরের প্রকৌশলী দেবব্রত কুমার পোদ্দার বলেন, এই অঞ্চল থেকে শার্শা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ঝড়ে তাদের ৭০ থেকে ৮০টি  খুঁটি ভেঙে গেছে। অন্তত ২০০ জায়গায় মেইন লাইনের তার ছিঁড়ে গেছে।

তিনি ক্ষয়ক্ষতির ধারণা দিলেও কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি।

ওই অঞ্চলের লাইনম্যান (গ্রেড-১) আবুল কালাম বলেন, “আমাদের ১০ জন লাইনম্যান আছে। এই নিয়ে বিপুল পরিমাণ লাইনের কাজ করতে হবে। খুবই দেরি হবে। মাস খানিকও লেগে যেতে পারে।”