বরগুনায় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে ব্যবসায়ীর মৃত্যু

বরগুনার সদর উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্র যাওয়ার পথে এক রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী ‘অসুস্থ হয়ে’ মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন একজন জনপ্রতিনিধি।

বরগুনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 May 2020, 09:56 AM
Updated : 20 May 2020, 04:31 PM

উপজেলার এম বালিয়াতলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ সেলিম জানান, তার ইউনিয়নের পরীরখাল মাধ্যমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে শহীদুল ইসলাম (৬৪) নামে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়।

শহীদুল ওই এলাকারই বাসিন্দা, পরীরখাল বাজারে একটি রেস্তোরাঁ চালাতেন তিনি।

ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, “শহীদুল আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন। তবে তার মধ্যে করোনাভাইরাসের কোনো লক্ষণ ছিল না। আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে হৃদরোগে ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।”

বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা আক্তার বলেন, “শহীদুল আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন। তার পরিবারকে যথাযথ সহায়তা দেওয়া হবে।”

বেড়েছে নদীর পানি

এদিকে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে বরগুনার পায়রা, বিষখালী ও বলেশ্বর নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

বরগুনার বড়ইতলা ফেরি ঘাটের আবদুল খালেক বলেন, “বিষখালী নদীর এ এলাকায় জোয়ারের পানি এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে ফেরির ,,গ্যাংওয়েসহ সংযোগ সড়ক তলিয়ে গেছে। জোয়ারের উচ্চতা স্বাভাবিকের থেকে ৫ থেকে ৭ ফুট বেশি না হলে এখানে সাধারণত পানি ওঠে না।”

পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের ফয়সাল সিকদার বলেন, “পায়রা নদীতে প্রচণ্ড ঢেউ শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে জোয়ারের উচ্চতাও বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক। এই উচ্চতা বেড়েই চলছে। পানির উচ্চতা এভাবে বাড়তে থাকলে এই এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে বেশি সময় লাগবে না।”

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন বিষখালী নদীর তীরের বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, স্বাভাবিকের তুলনায় নদীতে অনেক পানি বেড়েছে। আর একটু পানি বৃদ্ধি পেলেই আমাদের ঘর বাড়ি পানিতে ঢুকে যাবে।

বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক মো. মাহতাব হোসেন বলেন, বুধবার সকাল ও দুপুরের দিকে এসব নদীর পানি যেটুকু বৃদ্ধি পেয়েছে তা স্বাভাবিক জোয়ারের থেকে অনেক বেশি। আজ সকাল ৯ টায় বরগুনায় জোয়ারের উচ্চতা ছিল ২. ৮৫ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার সমান সমান। আর এক ঘণ্টার ব্যবধানে বরগুনায় জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে ৩.১০ সেন্টিমিটার হয়েছে। এই মুহূর্তে বরগুনার প্রধান তিনটি নদীতে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, “ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ১০ থেকে ১৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর আগেই আমাদের সতর্ক করেছে। জেলায় ৮০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল যা আমরা মেরামত করতে সক্ষম হয়েছি।

“বরগুনার প্রধান তিনটি নদীতে জোয়ারের উচ্চতা ইতোমধ্যেই বৃদ্ধি পাওয়ার খবর আমি পেয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত কোথাও লোকালয় প্লাবিত হওয়ার খবর পাইনি।”