মঙ্গলবার সকাল থেকেই এ জেলার কোথাও হালকা কোথাও মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে আর পুরো জেলার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। ভোলা সংলগ্ন মেঘনা তেতুলিয়ায় স্বাভাবিক জোয়ারের চাইতে অতিরিক্ত পানি প্রবাহিত হতে দেখা যাচ্ছে।
এরই মধ্যে সন্ধ্যা পর্যন্ত অরক্ষিত চরের মানুষদের বেশিরভাগকেই ট্রলারে করে জেলার মূল ভূখণ্ডে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
এ জেলায় ২১টি চরে মানুষের বসতি রয়েছে। ২১টির মধ্যে ১৯টি চরেই সাইক্লোন শেল্টার আছে।
ভোলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক জানান, চরফ্যাশনের ঢাল চর এবং মনপুরার চর সামসুদ্দিনে কোনো আশ্রয়কেন্দ্র নাই।
এরমধ্যে ঢাল চরে আনুমানিক আট হাজার এবং চর সামসুদ্দিনে আড়াই হাজার মানুষ বাস করেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, চর সামসুদ্দিনে আড়াই হাজার মানুষকে এরই মধ্যে মনপুরার মূল ভুখণ্ডে আনা হয়েছে।
“চরফ্যাশনের ঢাল চর থেকে প্রায় ৫০টি ট্রলারে করে সেখানকার মানুষদের চরফ্যাশনের মূল ভূখণ্ডে আনার কাজ চলছে।”
মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ সেখানকার চার হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান তিনি।
“সন্ধ্যা পর্যন্ত এ জেলার ৭৬ হাজার লোককে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে।”
প্রায় আট হাজার মানুষের বাস ঢালচরের ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সালাম জানান, মঙ্গলবার বিকাল ৪টার মধ্যে প্রায় চার হাজার লোককে চরফ্যাশনের দক্ষিণ আইচা আশ্রয় কেন্দ্র সমূহে নেওয়া হয়েছে।
“অবশিষ্টদের ও নেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ”
পশ্চিম মধ্যবঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে সোমবার থেকেই সত্তরের ঘূর্ণিঝড়ে লাখো মানুষের প্রাণ হারানোর স্মৃতিবাহী জেলা ভোলায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এ দুর্যোগ মোকবেলায় বিভিন্ন প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত ৪০০টিসহ এক হাজার ১০৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে এ জেলায়।
জেলা প্রশাসক দপ্তরের ঘূর্ণিঝড় আম্পান নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আকিব ওসমান জানান, আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানকারীদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ভোলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক জানান, সবাইকে সতর্ক করার পাশাপাশি সোমবার সন্ধ্যা থেকে নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে সিপিপি ও রেডক্রিসেন্টের ১০ হাজার ২০০ স্বেচ্চাসেবী কাজ করেছে।
উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে নৌবাহিনী, নৌ-পুলিশ, জেলা পুলিশ ও কোস্টগার্ড এসব মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে সহায়তা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
“আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা ছাড়াও নগদ টাকা, শুকনো খাবার ও শিশু খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।”
এছাড়া ৯২টি মেডিকেল টিম গঠন করার কথা জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের আগে, ঘূর্ণিঝড়কালিন ও পরবর্তী এ তিনটি ধাপে কাজ করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন।