বদলে গেল চাষিদের প্রশিক্ষণের পরিবেশও

দেয়ালের ঘেরা চত্বর থেকে প্রকৃতির মাঝে শিক্ষাদানকে নিয়ে যাওয়া কথা মনীষীরা বলে এলেও তাতে সাড়া মেলেনি খোদ কৃষক প্রশিক্ষণেও।

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2020, 01:19 PM
Updated : 19 May 2020, 01:19 PM

বাংলাদেশের মাঠে কাজ করা চাষিদের শহুরে অট্টলাকিয়া এনে দেওয়া হতো কৃষি বিষয়ক প্রশিক্ষণ। তবে করোনাভাইরাসের শঙ্কায় ঘর ছেড়ে স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে পাঠদান শুরুর পাশাপাশি এবার চাষিদের কর্মশালাও শুরু হয়েছে ছায়াঘেরা বাগানের।

মঙ্গলবার সকালে এমন এক তিনদিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হানুরবাড়াদি গ্রামের এক আমবাগানে।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবাইর মাসরুর বলেন, “মাঠে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সুবিধা হল-আমবাগানের পাশের বিভিন্ন কৃষিক্ষেতে নিয়ে গিয়ে কৃষকদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

তিনি জানান, কৃষকদের কৃষি কাজে আরো দক্ষ করে তোলার জন্য কৃষি বিভাগ গুরত্বপূর্ণ এই কৃষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। কৃষকদের এসব প্রশিক্ষণ কৃষি অফিমের হলরুমেই হয়ে আসছিল।

কৃষকদের হলরুমে একত্রিত করায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কর্মশালাস্থলে পরিবর্তন আনা হয়েছে। যে এলাকার কৃষক প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন সেই এলাকার কাছাকাছি কোনো আমবাগানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এখন প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া কৃষক তাহাজ উদ্দিন বলেন, “কৃষি অফিসাররা আমাদের গ্রামে এসে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। এতে খুবই ভালো হয়েছে।

“এখন করোনার সময়ে আমাদের ঝুঁকি নিয়ে চুয়াডাঙ্গা শহরের কৃষি অফিসে যেতে হল না। আবার নিজেদের গ্রামের আমবাগানে বসে আমরা প্রশিক্ষণও পেলাম খুবই সহজেই। আমরা আমাদের সম্মানি ও যাতায়াত ভাতাও পেলাম। যা ঈদের আগে আমাদের কাজে আসবে “

প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া এক কিষাণী বলেন, “আমার বাড়ির কাছের মাঠে প্রশিক্ষণ হলে আমাদের জন্য খুবই সুবিধা। শহরে যাওয়ার ঝামেলা থাকে না।”

প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী কৃষকদের যাতায়াত ভাতা ও সম্মানি দেওয়ার নিয়মের কথা পেড়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তালহা জানান, এ প্রশিক্ষণের আয়োজন হানুরবাড়াদি গ্রামের এক আমবাগানে করার কারণে কৃষকদের সব দিকেই সুবিধা হয়েছে। তারা তাদের এলাকায় থেকেই কোনো প্রকার ঝুঁকি ছাড়াই প্রশিক্ষণ নিতে পারছেন।

বৃহত্তর কৃষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ আয়োজন উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আলী হাসান। এতে হানুরবাড়াদি গ্রামের ৩০ জন কৃষক ও কৃষাণি অংশ নিচ্ছেন।

উদ্বোধনের দিনে অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবাইর মাসরুর ও উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আমিরুল হক উপস্থিত ছিলেন।

আগামী বৃহস্পতিবার এ প্রশিক্ষণ কর্মশালা শেষ হবে।