নীলফামারী-খুলনা পণ্যবাহী ট্রেন চালু

নীলফামারীর ডোমার উপজেলা থেকে খুলনা পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রেন চালু করা হয়েছে।

নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2020, 01:48 PM
Updated : 15 May 2020, 02:03 PM

শুক্রবার সকাল ৯টায় উপজেলার চিলাহাটি রেলওয়ে স্টেশন থেকে ‘চিলাহাটি পার্সেল স্পেশাল খুলনা’ ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে।  

বাংলাদেশ রেলওয়ের (পশ্চিমাঞ্চল) সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট আব্দুল আওয়াল জানান, খাদ্যসহ জরুরিপণ্য বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দিতে রেলের এই পার্সেল ট্রেনটি চালু করা হয়েছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে নীলফামারীর সঙ্গে পণ্যবাহী ট্রেনটির যোগাযোগ স্থাপন হওয়ায় এই পথে কৃষিসহ অন্যান্য পণ্য পরিবহন করা হবে। এ জন্য ট্রেনটির নাম ‘চিলাহাটি পার্সেল স্পেশাল খুলনা’ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ট্রেনটি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় খুলনা স্টেশন থেকে ছেড়ে নীলফামারীর চিলাহাটি স্টেশনে পৌঁছে রাত ৮টা ৪০ মিনিটে। শুক্রবার সকাল ৯টায় সেটি চিলাহাটি থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এ পথে ট্রেনটির যাত্রাবিরতি রয়েছে- ডোমার, নীলফামারী, সৈয়দপুর, পার্বতীপুর, ফুলবাড়ী, বিরামপুর, পাঁচবিবি, জয়পুরহাট, জামালগঞ্জ, আক্কেলপুর, তিলকপুর, সান্তাহার, আহসানগঞ্জ, নলডাঙ্গা, নাটোর, আব্দুলপুর, ঈশ্বরদী, ভেড়ামারা, পোড়াদহ, আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা, দর্শনা, আনসারবাড়িয়া, সাফদারপুর, কোটচাঁদপুর, যশোর, নওয়াপাড়া, দৌলতপুর ও খুলনা স্টেশনে।

“আর বিরতি না থাকা স্টেশনে পরিবহনযোগ্য মাল থাকলে সংশ্লিষ্ট স্টেশন মাস্টারকে আগাম জানালে সেখান থেকে পণ্য তুলে নেওয়া হবে। যাত্রা শেষে ট্রেনটি খুলনায় রাত সাড়ে ৮টায় পৌঁছাবে ।”

শুক্রবার জেলার চিলাহাটি রেলস্টেশন হতে ১০০ কেজি ওজনের ২৮ বস্তা কাঁচামরিচ, ৫০ কেজি ওজনের ১০ বস্তা সুপারী ও ৩০ কেজি ওজনের ছয় প্যাকেট টমেটো, ডোমার স্টেশন হতে ৭০ কেজি ওজনের ৩৮ বস্তা কাঁচামরিচ ও এক বান্ডিল বাঁশের চাটাই, নীলফামারী রেলস্টেশন থেকে ৭০ কেজি ওজনের পাঁচ বস্তা কাঁচামরিচ, ১০০ কেজি ওজনের দুই বস্তা আদা, ১০টি পোনা মাছের ড্রাম ও একটি পরিবারের বিভিন্ন আসবাবপত্র, সৈয়দপুর রেলস্টেশন হতে ৭০ কেজি ওজনের ২৮ বস্তা কাঁচামরিচ ও ৩০ বস্তা নতুন বাইসাইকেলের যন্ত্রপাতি পরিবহন করে ব্যবসায়ীরা। এ সকল পণ্য খুলনা, দৌলতপুর, যশোর, ঈশ্বরদী, দর্শনা ও চুয়াডাঙ্গা পৌঁছবে।

ট্রেনটির যাত্রা শুরুতে মালামাল পরিবহনে সাড়া পড়েছে এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে।

নীলফামারী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ওবায়দুল ইসলাম রতন বলেন,“পণ্যবাহী ট্রেনটি শুক্রবার সকাল ৯টায় চিলাহাটি স্টেশন থেকে ছেড়ে ৯টা ৪৫ মিনিটে নীলফামারী স্টেশনে পৌঁছে। এখান থেকে দুইজন কৃষকের তিনশ কেজি মরিচ, ২৪০ কেজি আদা, একজন পোনা মাছ ব্যবসায়ীর ১০টি পোনা মাছের ড্রাম ও একটি পরিবারের বিভিন্ন আসবাবপত্রসহ মোট ৭৯০ কেজি পণ্য নিয়ে যাত্রা করে খুলনার উদ্দেশ্যে।”

আদাচাষি নীলফামারী ময়েজ উদ্দিন বলেন,“পরিবহনের অভাবে গত কয়েকদিন থেকে আদা নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। এই দুর্যোগে পণ্যবাহী ট্রেনটি চালু হওয়ায় অনেক স্বস্তি পেলাম। এই ট্রেনের মাধ্যমে ২৪০ কেজি আদা যশোরে পাঠালাম। এতে আমার অনেক খরচ কমেছে। ট্রাকে করে এই আদা পাঠাতে হলে আমার অনেক অর্থ গুনতে হত।”

মরিচ চাষি রশিদুল ইসলাম বলেন,“সড়ক পথে কাঁচাপণ্য পরিবহনের সুযোগ থাকলেও সেটি অনেক ব্যয়বহুল। ট্রেনে পরিবহন অনেক সাশ্রয়ী। এই দুর্যোগে সরকার পণ্য পরিবহনের জন্য পার্সেল ট্রেন চালু করায় জেলার কৃষক ও ব্যবসায়ীদের অনেক উপকার হবে। এতে সময় মতো কৃষক ও ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যসামগ্রী খুলনা পর্যন্ত পরিবহন করতে পারবে।”

এ বিষয়ে নীলফামারী শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি মারুফ জামান কোয়েল বলেন,“বিশেষ এই পার্সেল ট্রেনটি চালু হওয়ায় জেলার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা অনেক উপকৃত হবেন। তবে এই ট্রেনটি প্রতিদিন উভয় দিক থেকে চালু রাখলে ব্যবসায়ীরা বেশী উপকৃত হতো।”

সপ্তাহে পাঁচদিন এ ট্রেনটি খুলনা-চিলাহাটি রেলপথে চলাচল করবে।খুলনা থেকে শনিবার ও চিলাহাটি থেকে রোববার বন্ধ থাকবে।