লাইন মেরামতের সময় পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীর মৃত্যু, হত্যার অভিযোগ

বগুড়ায় পল্লী বিদ্যুতের এক কর্মী লাইন মেরামতের সময় বিদুৎস্পৃষ্টে মৃত্যুর ঘটনায় তার স্ত্রী ওই প্রতিষ্ঠানের সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ তুলেছেন।

বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2020, 01:16 PM
Updated : 15 May 2020, 01:16 PM

বুধবার নিহত লাইনম্যানের স্ত্রী বীথি আকতার বাদী হয়ে ধুনট থানায় ওই অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে ওসি কৃপা সিন্ধু বালা জানান।

আসামিরা হলেন বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আব্দুল কুদ্দুস, ধুনট পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মাহবুব জিয়া, এজিএম আব্দুর রশিদ, প্রকৌশলী ফিরোজ কবির, মথুরাপুর অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ এনায়েত হোসেন, লাইন পরীক্ষণ কর্মকর্তা এমদাদুল হক ও লাইনম্যান সুলতান।

বিদ্যুতের লাইন মেরামতের সময় সঞ্চালন লাইন চালু করে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

এদিকে, এ ঘটনায় পল্লী বিদ্যুতের এক কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার এবং আরেক কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

পরিবারের সদস্য ও মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ধুনটের চৌকিবাড়ী গ্রামের মৃত মতিয়ার রহমানের ছেলে রিপন সরকার বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর ধুনট জোনাল অফিসে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে মৌখিত চুক্তিতে দীর্ঘদিন ধরে লাইনম্যান হিসেবে কাজ করে আসছিল। সম্প্রতি ধুনট জোনাল অফিসের মথুরাপুর অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ এনায়েত হোসেন ও লাইনম্যান সুলতান মাহমুদের সঙ্গে রিপন সরকারের বিরোধ সৃষ্টি হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ৬ মে দুপুর ১টা ৪৭ মিনিটে এনায়েত হোসেন তার মোবাইল ফোন থেকে রিপন সরকারকে ফোন দিয়ে দিঘলকান্দি বাজারে একটি খুঁটিতে ট্রান্সফরমারে বিদ্যুৎ সংযোগ মেরামত করতে বলেন। কিন্তু রিপন সরকার সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকায় এনায়েত হোসেনকে অন্য লাইনম্যান দিয়ে সংযোগ মেরামত করতে বলেন।

“এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এনায়েত হোসেন তার চাকরি স্থায়ী না করার হুমকি দিলে ওই বৈদ্যুতিক খুঁটির উপর ওঠেন রিপন সরকার মেরামতের জন্য। এর আগে মোবাইল ফোনে এনায়েত হোসেন বিদ্যুতের মেইন সংযোগ বন্ধ করা হয়েছে বলে রিপনকে জানান।”

অভিযোগে বলা হয়, এরপর বিদ্যুৎ সংযোগ মেরামতের কাজ শুরু করেন রিপন। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরেই বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন রিপন। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওইদিন রাত ৯টায় তার মৃত্যু হয়।

ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা জানান, লাইনম্যানের মৃত্যুর ঘটনায় তার স্ত্রী বাদী হয়ে পল্লী বিদ্যুতের সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ধুনট পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মাহবুব জিয়া বলেন, থানায় হত্যার অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি তার জানা নেই। তবে লাইনম্যানের মৃত্যুর ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে মথুরাপুর অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ এনায়েত হোসেনকে ক্লোজড করা হয়েছে এবং লাইন টেস্টিং কর্মকর্তা এমদাদুল হককে চাকরি থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া অফিসের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।