শরীয়তপুরে ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ এসআইয়ের বিরুদ্ধে

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় স্ত্রী-ছেলেসহ এক ফল ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ঢাকায় কর্মরত পুলিশের এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে। 

শরীয়তপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 May 2020, 01:00 PM
Updated : 12 May 2020, 01:00 PM

চরসেনসাস ইউনিয়নের সিকদার কান্দি গ্রামে গত ৬ মে ঢাকার লালবাগ থানার এসআই মামুন মল্লিকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন স্থানীয় ফল ব্যবসায়ী দুদু মিয়া বেপারী।

দুদু মিয়ার ভাষ্য, এ ঘটনায় ভেদরগঞ্জের সখিপুর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ এসআই মামুন মল্লিকের নাম বাদ দিয়ে মঙ্গলবার মামলা গ্রহণ করেছে।  

তবে এসআই মামুন মল্লিক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি ওইদিন ঢাকায় তার কর্মস্থলে ছিলেন।

দুদু মিয়ার শ্যালক সোহেল রানা বলেন, গত ৫ মে সকালে দুদুর ছেলে শামীম বেপারী (২২) আটোরিকশায় করে গাছের চারা নিয়ে বালারবাজার রাস্তা দিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন। এ সময় ওই রাস্তা দিয়ে মোটরসাইকেলে করে আসছিলেন একই উপজেলার সখিপুর থানার মাগুন বেপারী কান্দি গ্রামের বাসিন্দা এসআই মামুনের ভাই রুবেল মল্লিক।

“ওই সময় গাছের পাতার সঙ্গে রুবেলের মোটরসাইকেলের ছোঁয়া লাগে। এ সময় রুবেল মোটরসাইকেল থামিয়ে শামীমকে এলাপাতাড়ি মারধর করে। এর কিছুক্ষণ পর শামীম ও তার ফুফাতো ভাই নূর সালামত বালারবাজার এলাকায় গিয়ে রুবেলকে মারধর করে।”

সোহেল বলেন, এর জের ধরে পরদিন রাত ৮টার দিকে এসআই মামুন মল্লিকের নেতৃত্বে তার ভাই রুবেল, মিঠু মল্লিক ও আল আমিন মল্লিকসহ ১০-১২ জন লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দুদু মিয়ার বাড়িতে হামলা চালান।  

“হামলাকারীরা দুদু, তার ছেলে শামীম ও স্ত্রী সালমা বেগমকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। পরে হামলাকারীরা দুটি স্বর্ণের চেইন ও নগদ ১ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর ও তছনছ করে।  তাদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা চলে যায়।”

পরে আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে শরীযতপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে বলে সোহেল জানান।

দুদু মিয়া বলেন, এ ঘটনার পর তারা সখিপুর থানায় মামলা করতে গেলে ওসি এনামুল হক মামলার এজাহারে এসআই মামুন মল্লিকের নাম দেখে মামলা নেননি। তিনি মামুনের নাম বাদ দিয়ে মামলা দায়ের করার জন্য বলেন। অন্যথায় মামলা রেকর্ড করা হবে না বলে জানিয়ে দেন।

“এরপর আমার স্ত্রী বাদী হয়ে সকালে ১৩ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।”

এ বিষয়ে সালমা বেগম বলেন, মামলা করতে গেলে সখিপুর থানার ওসি মামুনের নাম বাদ দিয়ে মামলা করতে বলেন। তারা মারামারির ভিডিও দাখিল করতে বলেন।

“ঘটনার সময় আমরা জীবন বাঁচাতে চেষ্টা করি। এ সময় আমাদের ভিডিও করার সুযোগ ছিল না। এ কথার পর তারা প্রভাব খাটিয়ে এসআই মামুনের বাদ দিয়ে মামলা রেকর্ড করেন।”

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই মামুন মল্লিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুদু মিয়ার ছেলে শামীম আমার ভাই রুবেলকে মারধর করেছে। পরে আমার ভাইও তাকে মারধর করেছে। ঘটনার দিন আমি ঢাকায় ডিউটিতে ছিলাম। আমি এর সঙ্গে জড়িত নই।”

এ ব্যাপারে সখিপুর থানার ওসি এনামূল হক বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে এসআই মামুনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ কারণে মামুনের নাম বাদ দিয়ে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। পরে ঘটনাটি তদন্ত করা হবে।”