রোববার সকাল ১০টায় দোকান খোলার আগে থেকে ক্রেতারা শহরের দোকানপাটের সামনে অপেক্ষা করছিল। দোকান খোলার সঙ্গে সঙ্গে হুড়োহুড়ি করে কেনাবেচা শুরু হয়। এরপর এ দিন বিকাল চারটায় দোকানপাট বন্ধ হওয়ার পর সোমবার একইভাবে বেচাকেনা চলেছে।
সোমবার সকাল ১০ টায় শহরের প্রাণকেন্দ্র নিচা বাজারে গিয়ে দেখা যায়- ‘বিসমিল্লাহ মার্কেট’ ও ‘মন্দির মার্কেটে’ ছিল ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। হুড়োহুড়ি করে লোকজন কেনাকাটা করেছে। দোকানের সামনে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখার চিহ্ন ও বেষ্টনি থাকলেও তা কেউ মানছেন না ।
একই অবস্থার দেখা মিলল উত্তরা সুপার মার্কেট ও স্টেশন বাজারের রোজি সুপার মার্কেটে। মূলত এসব মার্কেটে তৈরি পোশাক বেচাকেনা চলছিল। ক্রেতা-বিক্রেতারা মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস পরে থাকলেও তা ছিল দায়সারা গোছের।
কিছুটা বেলা বাড়ার পর পুলিশ সুপার বাজার পরিদর্শনে আসছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে দোকান মালিক ও কর্মচারীরা ক্রেতাদের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে তৎপর হয়ে ওঠেন।
ক্রেতাদের ভিড়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যাচ্ছে কি না জানতে চাইলে নিচাবাজারের তৈরি পোশাক বিক্রেতা আব্দুস সালাম বলেন, “দোকানের জায়গা সীমিত। অথচ ক্রেতার সংখ্যা অনেক বেশি। এছাড়া ঈদ উপলক্ষে একটা পোশাক নিতে ৩/৪ জন করে ঢুকতে চাচ্ছে। এ নিয়ে আমরাও সমস্যায় আছি। তবে ভিড় নিয়ন্ত্রণে আমরা চেষ্টা করছি “
ওই এলাকায় কথা হয় মেয়ের জন্য পোশাক কিনতে আসা সুইটি বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, তার মেয়ের এটায় প্রথম ঈদ। সরকার যে কোন সময় আবার দোকান বন্ধ করে দিতে পারে। তাই কষ্ট করে হলেও তিনি দোকানে এসে পোশাক কিনছেন।
শহরের মসজিদ মার্কেটে গিয়ে দেখা যায় মানুষের জটলা। মোবাইল ফোন কেনার চেয়ে মেরামত ও যন্ত্রাংশ বিক্রির দোকানে লোকজনের ভিড় ছিল বেশি। ছোট ছোট এসব দোকানে লোকজন গাদাগাদি করে বসে ও দাঁড়িয়ে ছিল লোকজন।
যন্ত্রাংশ বিক্রেতা বকুল হোসেন বলেন, “দীর্ঘদিন বন্ধের কারণে অনেকের মোবাইল নষ্ট হয়েছে। মেরামতের জন্য যন্ত্রাংশ কিনতে লোকজন আসছে। এছাড়া কাভার, হেডফোন কেনার ক্রেতার সংখ্যাও অনেক। আমরা ভিড় সামলানোর জন্য কঠোর হচ্ছি। কিন্তু মার্কেটে ঢুকতে তো নিষেধ করতে পারছি না।”
মামুন নামের এক তরুণ এসেছেন মোবাইল ফোনের কভার কেনার জন্য।
তাকে বলা হল এটা তো জরুরি জিনিস না। তারপরও নিয়ম না মেনে ভিড় করে কেন দোকানে ঢুকেছে জানতে চাইলে বলেন, “ফোনটা পড়ে গিয়ে ভেঙে যেতে পারে তাই কভার কিনতেই হবে।”
ক্রেতাদের ভিড় সামলাতে কি ব্যবস্থা নেওয়ার হয়েছে জানতে চাইলে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, তিনি প্রতিটি দোকানে দোকানে গিয়ে সরকারের নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ করেছেন। এরপরও যদি তারা নিয়ম না মানেন তাহলে দোকান বন্ধকরাসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।