‘কুচে নিয়ে কিশোরীর সঙ্গে কিশোরের রঙ্গ’, লাশ পড়ল বৃদ্ধের

লালমনিরহাটে এক ‘কিশোরীর কাছ থেকে কুচে মাছ কেড়ে নিয়ে রঙ্গ করার জেরে’ বাড়ি গিয়ে হামলায় এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

লালমনিরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2020, 05:45 PM
Updated : 9 May 2020, 05:45 PM

এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে শনিবার আদালতের মাধ্যমে চার আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

নিহত হানিফ মন্ডল (৬০) পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের নবীনগর এলাকার ইউনুস আলীর ছেলে।

গ্রেপ্তাররা হলেন, ওই এলাকার আব্দুর রশিদ রইশ্যা ও তার তিন ছেলে রাবিউল, রবিউল ও সামিউল ইসলাম।

পাটগ্রাম থানার ওসি সুমন কুমার মোহন্ত বলেন, এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মারামারির ঘটনায় হানিফ মন্ডল, তার ছেলের স্ত্রী লাইজু বেগম ও শ্যালকের স্ত্রী ফিরোজা বেগম আহত হন।

৬ মে গুরুতর জখম লাইজু ও ফিরোজাকে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলেও হানিফ মন্ডলকে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছিল তার পরিবারের লোকজন। পর দিন  হানিফ মন্ডলের মুখ দিয়ে রক্ত আসায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে তাকে। সেখানেই তিনি শুক্রবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বলে জানান তিনি।

“আমরা বিষয়টি জানার পরপরই আইনগত পদক্ষেপ নিয়েছি। আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”

শনিবার এ ঘটনায় নিহতের ছেলে বাদী হয়ে পাটগ্রাম থানায় মামলা করেন।

মামলার নথি উদ্ধৃত করে এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়,  গত বুধবার (৬মে) বিকাল ৪টার দিকে হানিফ মন্ডলের কিশোরী মেয়ে বালতিতে করে একটি কুচে মাছ নিয়ে প্রতিবেশি ভবেন চন্দ্র রায়ের বাড়িতে পান আনতে যাচ্ছিল।

এ সময় প্রতিবেশী আব্দুর রশিদ রইশ্যার ছেলে মো. রাসেল (১৮) ওই কিশোরীকে পেছন পেছন যেতে থাকে। পথে ভুট্টা ক্ষেতের আইল ধরে যাওয়ার সময় বালতি নিয়ে টানাটানি করে রাসেল। এতে বালতি থেকে কুচে মাছ মাটিতে পড়ে যায়। রাসেল মাছটি ধরে ওই কিশোরীকে ভয় দেখায় বলে জানায় তারা।

এরপর চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে ওই কিশোরী তার বড় ভাই দেলোয়ার হোসেনকে ঘটনার কথা জানায়। দেলোয়ার তখন আব্দুর রশিদ রইশ্যার বাড়ি গিয়ে রাসেলকে চড় মারে এবং বকা দিয়ে চলে আসে।

এ খবর পেয়ে আব্দুর রশিদ রইশ্যা ও তার ছেলেরা মিলে দেলোয়ার হোসেনের বাড়িতে গিয়ে লাঠিসোঁটা দিয়ে হানিফ মন্ডল, তার একমাত্র ছেলে দেলোয়ার হোসেন, দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী লাইজু বেগম, কিশোরীর মামি ফিরোজা বেগমকে বেদম মারধর করে গুরুতর জখম করে চলে যায় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

মামলার বাদী ও নিহতের ছেলে দেলোয়ার হোসেন বলেন, “আব্দুর রশিদ রইশ্যার লাঠির আঘাতে আমার বাবার মৃত্যু হয়েছে।

“আমার মামি ফিরোজা বেগম ও স্ত্রী লাইজু বেগমকে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে রবিউল,  রাবিউল ও সামিউল। আমি বাবাসহ তাদের রক্ষা করতে গেলে আমাকেও বেদম মারপিট করে।”

শনিবার রাতে জানাজা শেষে মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এর আগে শনিবার ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে রংপুর কোতোয়ালী থানার পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পাটগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল আলম বলেন, “শনিবার ভোরে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এরপরই অভিযান চালিয়ে এজাহার নামীয় আসামি আব্দুর রশিদ রইশ্যা ও তার তিন ছেলে রাবিউল, রবিউল ও সামিউল ইসলামকে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে বিকালে লালমনিরহাটে আদালতে পাঠানো হয়।”