গাইবান্ধায় রিকশাভ্যান ছিনতাই: গ্রামবাসীর হামলায় ৮ পুলিশ আহত

গাইবান্ধায় রিকশা-ভ্যান ছিনতাইকারীকে স্থানীয়দের রোষানল থেকে রক্ষা করে থানার আনার পথে গ্রামবাসীর হামলায় আট পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।

গাইবান্ধা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2020, 12:56 PM
Updated : 9 May 2020, 12:56 PM

সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের সরদারপাড়া গ্রামে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকের এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর ওই গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে বলে খবর পাওয়া গেছে।

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, সাদুল্লাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান, উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিলন মিয়া, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশরাফুল ইসলাম, থানার পি-কাপ চালক কন্সস্টেবল অণু রায়, কন্সস্টেবল আহসান হাবীব (১), আহসান হাবীব (২), দীপক কুমার ও রেজাউল করিম।

তাদের সবাইকে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের সরদারপাড়া গ্রামের রেজাউল মিয়ার ছেলে আরিফুল ইসলাম (২২), কোরবান আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩২) ও সাহেব আলী সরদারের ছেলে রাহেনুল ইসলাম সরদার (২১)।

এছাড়া পুলিশ রিকশা-ভ্যান ছিনতাইকারী সন্দেহ গ্রামবাসীর কাছ আটক ওই ইউনিয়নের মোংলাপাড়া গ্রামের একরামুল হোসেনের ছেলে মেহেদি মিয়া (২০) ও তাদের সহযোগী ওই ইউনিয়নের সরদারপাড়া গ্রামের মতি আকন্দের ছেলে হিরু মিয়াকেও (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তবে অপর সন্দেহভাজন ছিনতাইকারী ওই ইউনিয়নের ছোট ছত্রগাছা গ্রামের রানু মিয়ার ছেলে ফরিদুল (২২) পালিয়ে গেছে বলছে পুলিশ।

ঘটনা সম্পর্কে গ্রামবাসী জানায়, গত শুক্রবার রাতে মেহেদি ও ফরিদুল পার্শ্ববর্তী রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চতরাহাট থেকে ওয়াহেদ মন্ডল নামে এক ব্যক্তির ব্যাটারি চালিত রিকশাভ্যান ভাড়া করে সরদারপাড়ায় নিয়ে আসেন। সেখানে তারা রিকশা-ভ্যানটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে হট্টগোল বাধে। হৈচৈ শুনে এলাকাবাসী মেহেদি ও ফরিদুলকে আটক করে। এ সময় সরদারপাড়া দাখিল মাদ্রাসার সাধারণ কর্মচারী হিরু মিয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কৌশলে ফরিদুলকে তার জিম্মায় নিয়ে সটকে পড়ে। এতে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে মেহেদিকে এলোপাথাড়ি মারপিট শুরু হয়।

সাদুল্লপুর থানার ওসি মো. মাসুদ রানা জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে আটক মেহেদিকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসার পথে এলাকাবাসী পুলিশকে ঘেরাও করে। 

“উপস্থিত লোকজন মেহেদিকে তাদের জিম্মায় ছেড়ে দিয়ে আসার জন্য পুলিশকে চাপ দেয়। এছাড়া মাদ্রাসার কর্মচারী হিরু মিয়া ও ফরিদুলকে আটক করে তাদের জিম্মায় দেওয়ার জন্য দাবি জানায়।”

তিনি বলেন, এ সময় আইন হাতে তুলে না নিতে তাদেরকে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও এক পর্যায়ে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা শুরু করে তারা। এতে আট পুলিশ সদস্য আহত হলে লাঠিচার্জ করে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে।

ওসি জানান, এ ঘটনায় ধাপরেহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক (ইনচার্জ) রজ্জব আলী বাদি হয়ে শনিবার ৪৫ জনের উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩৫০ থেকে ৪০০ জনের বিরুদ্ধে সাদুল্লাপুর থানায় একটি মামলা করেছেন।

এছাড়া ছিনতাই ঘটনায় রিকশা-ভ্যান চালক রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের ওয়াহেদ মন্ডল বাদি হয়ে শনিবার অপর একটি মামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।