সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা, ‘হয়রানির’ প্রতিবাদ সাতক্ষীরায়

দেশের বিভিন্ন স্থানে তথ্য প্রযুক্তি আইনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলাকে ‘হয়রানিমূলক’ আখ্যায়িত করে এর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন সাতক্ষীরার সংবাদকর্মীরা।

সাতক্ষীরা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 May 2020, 03:50 PM
Updated : 7 May 2020, 03:51 PM

‘গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের কণ্ঠরোধের চেষ্টার প্রতিবাদ’ ব্যানারে বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের শহীদ আলাউদ্দিন চত্বরে সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন জেলার সাংবাদিকরা।

মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদের সভাপতিত্বে মানববন্ধন ও সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপী।

সমাবেশে আবু আহমেদ বলেন, সারাদেশে সাংবাদিকদের উপর হামলা মামলা জেল জুলুম নির্যাতন চালিয়ে গণমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করার চেষ্টা চলছে।

এর বিরুদ্ধে সারাদেশে সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের মানুষকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান এই মুক্তিযোদ্ধা।  

সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রায় দুইমাস পর সাংবাদিক কাজল উদ্ধার হওয়ার বিষয়টি স্বস্তির। এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ।

“তবে তার বিরুদ্ধে ‘হয়রানিমূলক’ মামলা এবং তাকে যেভাবে পিছমোড়া বেঁধে ‘হ্যান্ডকাফ’ পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও শিষ্টাচার পরিপন্থি।”

এসব পরিস্থিতি সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষকে বিক্ষুব্ধ হতে বাধ্য করে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

সাতক্ষীরার স্থানীয় পত্রিকা ‘দক্ষিণের মশাল’ সম্পাদক আশেক ই এলাহী বলেন, “বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদকসহ যেসব সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা হয়েছে তা বিবেচনা করে প্রত্যাহারে দাবি জানাচ্ছি।”

তিনি ‘গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ চেষ্টার’ বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানান।

সাংবাদিক শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গণমাধ্যমের ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে যেসব হয়রানিমূলক মামলা রয়েছে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান। একই সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিকদের ওপর যেসব ‘হামলার’ ঘটনা ঘটেছে তার বিচার দাবি করেন। 

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম কামরুজ্জামান, সাপ্তাহিক সূর্যের আলোর ওয়ারেশ খান চৌধুরী পল্টু, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের আবুল কাশেম, দৈনিক করতোয়ার সেলিম রেজা মুকুল প্রমুখ।

সম্প্রতি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী এবং জাগোনিউজের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে মামলা এবং সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা দেশে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় চাল চুরির ঘটনায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী এবং জাগোনিউজের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোমিনুল ইসলাম ভাসানী।

গত ১৭ এপ্রিল ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫/২৯/৩১ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।

অপরদিকে, গত ১০ মার্চ থেকে সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের খোঁজ মিলছে না জানিয়ে ঢাকার চকবাজার থানায় জিডি ও পরে মামলা করেন তার ছেলে মনোরম পলক। এরপর প্রায় দুই মাস নিখোঁজ ছিলেন তিনি। গত ৩ মে বেনাপোল সীমান্তে তার খোঁজ পাওয়া যায়। পরদিন অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলায় হাতে পিছমোড়া করে হাতকড়া পরিয়ে তাকে যশোর আদালতে হাজির করা হয়।

আরও পড়ুন