পদ্মা সেতুর রেল প্রকল্পে বিক্ষোভে চড়াও রক্ষীরা, ৮ শ্রমিক জখম

মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় পদ্মা সেতুর রেলওয়ে সংযোগ প্রকল্পে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের উপর নিরাপত্তা রক্ষীদের নিক্ষিপ্ত গুলির ছড়রায় অন্তত আট শ্রমিক আহত হয়েছেন।

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 May 2020, 07:39 PM
Updated : 6 May 2020, 07:40 PM

তবে আহত কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক নয় বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।

বুধবার রাতে মেদিনীমণ্ডলে প্রকল্প এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প (পিবিআরএলপি) পরিচালক গোলাম ফখরুদ্দিন এ চৌধুরী জানান।  

আহতদের শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

আহতরা হলেন জাকির (২৫), পারভেজ (১৮), সুমন (২৭), রাজু (২৬), নাঈম (২১), রাসেল (২৪), শুভ (২২) ও আলী মুনসুর (৫০)।

শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শাহ আলম রাত ১১টায় জানান, আহত আট এই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনা হয়েছে। তবে এদের কারও অবস্থাই আশঙ্কাজনক নয়।

“এদের গায়ে ছররা গুলির আঘাত রয়েছে। কারো কারো গায়ে রডের আঘাতের চিহ্নও আছে।”

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের (পিবিআরএলপি) পরিচালক গোলাম ফখরুদ্দিন এ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের (সিআরইসি) অধীনে কর্মরত শ্রমিকরা বেতন-ভাতা নিয়ে বিক্ষুব্ধ ছিল।

“এক পর্যায়ে ঠিকাদারের গার্ড শ্রমিকদের প্রতি গুলি ছোড়ে। এতে পাঁচ শ্রমিকের পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সবাই শঙ্কামুক্ত।”

তিনি আরও বলেন, পাশের ক্যাম্প থেকে সেনা সদস্য এবং স্থানীয় পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরিস্থিতি এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। বিষয়টি নিয়ে সচিব ও পিডির (প্রকল্প পরিচালক) সাথে কথা হয়েছে। সমস্যা সমাধানে বৃহস্পতিবার প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা ঘটনাস্থলে আসছেন।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকল্পটির দায়িত্বশীল আরেকজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের অধীনে ক্যাম্পটিতে ২০০-২৫০ জন শ্রমিক অবস্থান করছিল। বুধবার তাদের বেতন-ভাতা পরিশোধের পূর্ব নির্ধারিত তারিখ ছিল। কিন্তু যথাযথভাবে তাদের পাওনা পরিশোধ না করার কারণে অসন্তোষ দেখা দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রাতে শ্রমিকরা তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে ক্যাম্প থেকে পাশে পদ্মা সেতুর সার্ভিস এরিয়া-১ এ যেতে চাইলে নিরাপত্তা কর্মীরা বাধা দেয়; এক পর্যায়ে শ্রমিকদের উপর গুলি চালায়। ঠিকাদারে লোকজন রড দিয়েও পেটায় তাদের। এতে আটজন শ্রমিক আহত হয়।

এই শ্রমিক আরও বলেন, চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদার থাকা-খাওয়া বাদে প্রত্যেক শ্রমিককে মজুরি বাবদ প্রতিদিন ৩শ টাকা নগদ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত ২০ এপ্রিলের পর থেকে শ্রমিকদের কোনো টাকা দেয়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।