রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২শ ভারতীয় শ্রমিক দেশে ফিরতে চায়

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে স্বজনের জন্য উদ্বিগ্ন বাগেরহাটের রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ভারতের প্রায় দুইশ শ্রমিক দেশে ফিরতে চায়।

বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 May 2020, 01:31 PM
Updated : 4 May 2020, 01:31 PM

সোমবার সকালে এই দাবিতে রামপাল উপজেলার সাপমারী-কৈগরদশকাঠি এলাকায় নির্মাণাধীন ওই প্রকল্পের শ্রমিকরা প্রধান ফটকের বাইরে খুলনা-মোংলা মহাসড়কে অবস্থান নেয়।

খবর পেয়ে দুপুরে পুলিশ গেলে শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের বাদানুবাদ হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ শ্রমিককে বুঝিয়ে প্রকল্প এলাকার ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়।

পরে শ্রমিকদের সঙ্গে বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ, পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায়, বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেডের উপ প্রকল্প পরিচালক রেজাউল করিম বৈঠকে বসেছেন।

ভারতীয় শ্রমিকরা সাংবাদিকদের বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে তারা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উদ্বিগ্ন। বাড়িতে স্ত্রী, সন্তান, মা, বাবা কেমন আছেন তা তারা জানতে পারছেন না।

পরিবারের কাছে দেশে ফিরতে এখানকার কর্তৃপক্ষকে বার বার বলা হলেও তাদের ফেরার ব্যবস্থা করছে না; তাই তারা দেশে ফেরার দাবি জানাতে রাস্তায় অবস্থান নেন বলে জানান।

বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেডের উপ প্রকল্প পরিচালক রেজাউল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কয়লাভিত্তিক এই তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজে ভারতের প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক নিয়োজিত আছে। গত দুই বছর ধরে তারা এখানে কাজ করছে। মার্চ মাসে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে এই প্রকল্প এলাকায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। ভারতজুড়ে এখন লকডাউন চলছে। এই প্রকল্পের কর্মরত দেড় হাজার শ্রমিকের মধ্যে দেড় থেকে দুইশ শ্রমিক সম্প্রতি দেশে ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছেন। পরিবারের সদস্যদের জন্য তাদের দুশ্চিন্তা বেড়েছে। তাই তারা দেশে ফিরতে চান।

“তাদের ফেরার বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় দূতাবাসে আমরা কথা বলেছি। তারা উদ্যোগ না নিলে আমরা কীভাবে এই শ্রমিকদের দেশে ফেরাব তাই বোঝাতে পারছি না। ভারতীয় দূতাবাস চাইলে আমরা এদের দেশে ফেরত পাঠাব।”

সোমবার সকালে দেড় থেকে দুইশ শ্রমিক প্রধান ফটক দিয়ে বাইরে বেরিয়ে রাস্তায় অবস্থান নেয় বকলে রেজাউল করিম জানান।

তিনি বলেন, “পরে পুলিশ এসে তাদের প্রকল্প এলাকায় ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে। তাদের বোঝাতে বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উদ্যোগ নিয়েছেন। আশা করছি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’

বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেড যৌথভাবে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করছে। ২০১৩ সালের ৮ অক্টোবর বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার সাপমারি-কাটাখালী ও কৈগরদাশকাঠী এলাকায় ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিট নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তার স্থাপন করে। ১৮৩৪ একর জমির উপর প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।