কোভিড-১৯: টিএমএসএসের কর্মচারীর বেতন কর্তন

করোনাভাইরাস মহামারীতে অবরুদ্ধ অবস্থায় বেসরকারি সংস্থা টিএমএসএস তাদের কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতনের এক তৃতীয়াংশ কেটে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জিয়া শাহীন বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 May 2020, 12:54 PM
Updated : 4 May 2020, 01:13 PM

এছাড়া বিনা বেতনে অনির্দিষ্টকালের জন্য আটটি বিভাগে ছুটি ঘোষণা করা হয়।

গত ৩১ মার্চ ও ৩০ এপ্রিল টিএমএসএসের নির্বাহী পরিচালক হোসনে আরা এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের হাতে আসা টিএমএসএসের বার্ষিক প্রতিবেদনের নথি থেকে জানা যায়, ৩১ হাজার ৯১৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী দেশের ৬৪ জেলার ৪ হাজার ৮৩৭টি ইউনিয়নে ২৯ হাজার গ্রামে কাজ করছে। ক্ষুদ্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশের ৪র্থ বৃহত্তম টিএমএসএস। প্রতিষ্ঠানটির একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ফাইভ স্টার হোটেলসহ বিভিন্ন কলকারখানা রয়েছে। ২০২০-২১ সালের বার্ষিক বাজেট ধরা হয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারীতে দেশে অবরুদ্ধ অবস্থায় গত ৩১ মার্চ এক আদেশ জারি করেন নির্বাহী পরিচালক হোসনে আরা।

ওই আদেশে কর্মকর্তা-কর্মচারীর মার্চ মাসের দুই তৃতীয়াংশ বেতন দিতে বলা হয়।   

ওই কর্তন করা টাকাকে তিনি ‘করজে হাসানত’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

এরপর গত ৩০ এপ্রিল নির্বাহী পরিচালক আরেকটি আদেশ দিয়েছেন। তাতে শিক্ষা উন্নয়ন বিভাগ, অডিট, মনিটরিং, এসকিউএআর, জিজি, জিজিআইসি, আইসিপি ও আইআইসিডি এই আটটি বিভাগের কর্মচারী ও কর্মকর্তার বেতনবিহীন অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়।

এই ১লা এপ্রিল থেকে এই আট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোনো ভূমিকা রাখেননি বলে বন্ধের কারণ হিসেবে ‍দেখানো হয়েছে।

কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ধান কাটার ইঙ্গিত দিয়ে ওই আদেশে সকলকে কায়িক পরিশ্রম করার অনুরোধ করে বলা হয়, কায়িক পরিশ্রম করে উপার্জন করলে ব্যায়ামের প্রয়োজন হয় না।

এ ধান কাটা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেরও উদাহরণ টানা হয়।

টিএমএসএস-এর পরিচালক (প্রশাসন) শাহজাদী বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বেতনের অংশটি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নেওয়া হবে; পরে তা প্রদান করা হবে।”

আটটি বিভাগে ছুটির বিষয়ে তিনি বলেন, “ওইসব বিভাগের এখন আপাতত কাজ নেই; তাই ছুটি দেওয়া হয়েছে।”

ধান কাটা বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা নিজেরাও ধান কেটেছি। টিএমএসএসের কাজের অংশ এটা। এই ধানকাটা বলায় কোনো অপরাধ নয়। বিষয়গুলো বুঝতে হবে আপনাদের।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মচারী-কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে এমনিতেই জীবন জীবিকার অন্যান্য পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে এই বেতন কর্তন করা যেন মরার উপর খাড়ার ঘা।

কেউ কেউ অভিযোগ করেন, বকেয়া নামে যা রাখে টিএমএসএস তা কখনও প্রদান করে না। চাইলেই চাকরি চলে যাবার ভয়ে মুখ খোলে না কেউ।

তবে এই অভিযোগটি অস্বীকার করে পরিচালক শাহজাদী বেগম বলেন, “টিএমএসএস বেতন দেয়নি এমন কোনো নজির নেই।”