বাঁধ নির্মাণ নিয়ে বিরোধ: নীলফামারীতে পুলিশ-গ্রামবাসী সংঘর্ষ

নীলফামারীতে ভাঙন ঠেকাতে এক বাঁধ নির্মাণ ঘটনার জেরে পুলিশ-গ্রামবাসী সংঘর্ষে পুলিশসহ তিনজন আহত হয়েছে।

নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2020, 01:42 PM
Updated : 27 April 2020, 01:42 PM

সোমবার বেলা ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের ইটাখোলা গ্রামে  এ সংঘর্ষ বাধে।

এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মফিজুল হকসহ দুই গ্রামবাসী আহত হয়েছেন।

আহতদের মধ্যে দুই গ্রামবাসী গ্রামবাসী ইলিয়াছ হোসেন ও তার স্ত্রী তাহমিনা বেগমকে

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে এবং পুলিশ কর্মকর্তা মফিজুল ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে থানায় ফিরেছেন বলে জানায় পুলিশ।

কিশোরগঞ্জ থানার ওসি মো হারুন অর রশীদ জানান, সেখানে ঈদগাহ ময়দানের জায়গা নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। এ ঘটনায় পরস্পরের মধ্যে মামলাও হয়েছে।

“সোমবার সকালে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ অবস্থায় পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে গেলে এক নারী মাটিতে পড়ে যায়।

“উত্তেজিত এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। তাতে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মফিজুল হক সামান্য আহত হন। তাকে কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।”

তবে ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে স্থানীয়রা জানান, ওই গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া চারালকাটা নদী সম্প্রতি খননের ফলে ভাঙনের মুখে পড়ে গ্রামের ঈদগাহ মাঠ। সেটি রক্ষায় গত ২১ এপ্রিল গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ করতে গেলে মাঠের মালিকানা দাবি করে তাতে বাধা দেন ওই গ্রামের তছলিম উদ্দিনসহ (৪৫) তার লোকজন। সেদিন দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আলমগীর হোসেনসহ (৪৪) বাঁধ নির্মাণের পক্ষের চারজন আহত হন।

এ ঘটনায় পরদিন আলমগীর হোসেন থানায় মামলা করলে তছলিম উদ্দিনও পাল্টা মামলা করেন বলে স্থানীয়রা জানায়।

সোমবার এলাকাবাসী পুণরায় বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করলে প্রতিপক্ষ তছলিম উদ্দিন তার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল ওহাবকে ফোন করে ডেকে আনেন।

বাঁধ নির্মাণকারীদের পক্ষের আলমগীর হোসেন বলেন,“উপ-পরিদর্শক আব্দুল ওহাব ঘটনাস্থলে এসে তছলিম উদ্দিনের পক্ষ অবলম্বন করে স্থানীয়দের ওপর নির্বিচারে লাঠিপেটা শুরু করেন। প্রতিবাদ করলে গ্রামের ইলিয়াছ হোসেনকে (৪৫) নদীর পানিতে ফেলে মারধর ও পা দিয়ে পানির নিচে চেপে ধরেন।

“ইলিয়াছের স্ত্রী তাহমিনা বেগম (৩৫) স্বামীকে উদ্ধার করতে গেলে তাকেও বেধড়ক মারপিট করেন। এ অবস্থায় গ্রামবাসী ধাওয়া দিলে আব্দুল ওহাব দৌঁড়ে পালিয়ে যান।”

খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মফিজুল হকের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে গ্রামবাসীর ওপর লাঠিচার্জ করলে গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে বলে দাবি করেন তিনি।

তবে লাঠিচার্জ ও বাঁধ নির্মাণের বিরোধী পক্ষকে পুলিশের সমর্থন করা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন পুলিশের ওসি।

কিশোরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম বারি পাইলট বলেন,“আমি বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীকে শান্ত করি।

“অ্যাম্বুলেন্স ডেকে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মফিজুল হক, গ্রামবাসী ইলিয়াছ হোসেন ও তার স্ত্রী তাহমিনা বেগমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠাই।”

বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে জানান তিনি।

তছলিম উদ্দিন ও পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল ওহাবের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।