কোভিড-১৯: ময়মনসিংহ মেডিকেলে জমা শত শত নমুনা

সক্ষমতার তুলনায় বেশি নমুনা আসার কারণে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ পরীক্ষাগারে করোনাভাইরাস পরীক্ষায় আসা কয়েকশ নমুনা জমে গেছে।

ইলিয়াস আহমেদ ময়মনসিংহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2020, 11:18 AM
Updated : 30 April 2020, 04:15 PM

তবে কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফলাফল আরও দ্রুত করতে দুই পালার পরিবর্তে তিন পালা পরীক্ষা চালু করার কথা জানিয়েছেন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ চিত্তরঞ্জন দেবনাথ।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ইদানিং প্রচুর নমুনা আসায় সাত শতাধিক পরীক্ষার জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। এছাড়া পাঁচ শতাধিক নমুনা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সেগুলোর রিপোর্ট দুয়েকদিনের মধ্যে চলে আসবে বলে আশা করা যায়।

“অন্যদিকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরও একটি পিসিআর (পলিমার চেইন রিঅ্যাকশন) মেশিন আনা হয়েছে। সেটির জন্য ল্যাব (পরীক্ষাগার) স্থাপনের কাজ চলছে। আরও এক সপ্তাহ লাগতে পারে।”

ওই পরীক্ষাগার চালু হলে প্রতিদিন আরও ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা যাবে বলে তিনি জানান।

অধ্যক্ষ বলেন, “আমরা এখন সিদ্ধান্ত নিচ্ছি আমাদের পিসিআর ল্যাবে দুই শিফটের (পালা) পরিবর্তে তিন শিফটে টেষ্ট চালু করার। ময়মনসিংহ বিভাগে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৮০৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ এসেছে ২১৩টি।”

প্রায় দেড় কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার রোগীদের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য গত ২ এপ্রিল একটি পিসিআর পরীক্ষাগার স্থাপন করা হয়েছে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে স্থাপিত এ পরীক্ষাগারে শুরু থেকেই দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ানরা।

মেডিকেল কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিদিন দুই পালায় তারা ৯৪টি করে মোট ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করতে পারেন। কিন্তু বর্তমানে প্রচুর নমুনা আসায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে।

এদিকে, পাঁচ দিন ধরে শেরপুর জেলার কোনো নমুনাই পরীক্ষা হয়নি।

শেরপুরের সিভিল সার্জন একেএম আনওয়ারুর রউফ জানান, ২১ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত শেরপুর জেলার কোনো নমুনাই পরীক্ষা হয়নি। ২৬ এপ্রিল (রোববার) কয়েকটি নমুনার ফল এসেছে।

ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন এবিএম মসিউল আলম জানান, ময়মনসিংহ থেকে এ পর্যন্ত এক হাজার ১৭৮টি নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে ৯১৮টির। তার মধ্যে পজিটিভ এসেছে ১০৮টির; আরও ২৬৭টি নমুনার পরীক্ষা অপেক্ষমাণ।

নেত্রকোনার সিভিল সার্জন তাজুল ইসলাম জানান, এ জেলা থেকে ৯৮৪টি নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। পজিটিভ এসেছে ৩৩টির। কিন্তু জেলা থেকে মোট কতটি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এবং কতটি এখানো বাকি রয়েছে, তার সঠিক তথ্য দিতে পারেননি এই চিকিৎসক।

জামালপুরের সিভিল সার্জন আবু সাঈদ মাহবুবুর রহমান জানান, এ পর্যন্ত ৯০৩টি নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। করোনা পজিটিভ এসেছে ৪৪ জনের দেহে। এ জেলা থেকে মোট কতটি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এবং কতটির পরীক্ষা এখনও বাকি রয়েছে তার সঠিক তথ্য দিতে পারেননি তিনিও।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি মতিউর রহমান ভূইয়া বলেন, ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) আরও একটি পিসিআর মেশিন রয়েছে। বাকৃবির ওই ল্যাবটিকে করোনা পরীক্ষার উপযোগী করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হলে সেখানে অনেক নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা হতে পারে।