মৌলভীবাজারে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত

দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক যুবক ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন।

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2020, 06:29 PM
Updated : 25 April 2020, 06:29 PM

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে আক্রান্ত ওই যুবককে তার বাসায় রেখেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদ আহমদ চৌধুরী।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী জানান, আক্রান্ত যুবক শ্রীমঙ্গল শহরের কলেজ রোডের অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য পরিদর্শক মো. আব্দুল মালেকের ছেলে মো. তারেক (৩৫)।  

ডা. সাজ্জাদ জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে তারেক জ্বরে ভুগছিলেন। সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও জ্বর ভালো না হওয়ায় তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে জ্বরের তীব্রতা ও অন্যান্য উপসর্গ দেখে তার ডেঙ্গুর লক্ষণ অনুমান করেন তারা। পরে শনিবার একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে তার ডেঙ্গু জ্বরের পরীক্ষা করে প্রজেটিভ পাওয়া যায়।

তিনি জানান, ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়ার পরপরেই তাকে তার বাসায় রেখেই ডেঙ্গুর চিকিৎসা শুরু হয়েছে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সিলেট বিভাগের প্রাক্তন স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হরিপদ রায় জানান, বর্ষা শুরুর আগেই পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। 

তিনি বলেন, “এক দিকে করোনা অন্যদিকে ডেঙ্গু।

“তার উপর এখন রোজার মাস। সব কিছু বিবেচনা করে এ সময়ে সচেতন না হলে সামনে আমাদের বড় দুর্যোগে পড়তে হবে।”

এখনই ডেঙ্গুর লার্ভা ধ্বংস করে ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর নানা রেকর্ড সৃষ্টি হয়। ২০১৯ সালে এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আইইডিসিআর ২৬৩টি মৃত্যুর তথ্য পাওয়ার পর তার মধ্যে ১৬৪ জনের মৃত্যু ডেঙ্গুর কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করে।

গত বছর দেশের প্রায় সব এলাকায় ডেঙ্গুর জীবাণু বাহক এইডিস মশার বিস্তার ঘটতে দেখা গেছে। গত মে মাস থেকে ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়, জুন ও জুলাইয়ে ক্রমশ বেড়েছে অগাস্টে তা মারাত্মক রূপ নেয়। দেশজুড়ে এইডিস মশার বিস্তারের কারণে ডেঙ্গু সারাবছরই কমবেশি থাকবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে জ্বরের তাপমাত্রা গড়াতে পারে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত। এ রোগের কিছু সাধারণ উপসর্গ হল বিরামহীন মাথাব্যথা, হাঁড়, হাঁড়ের জোড় ও পেশিতে ব্যথা, বমিভাব ও বমি হওয়া, গ্রন্থি ফুলে যাওয়া, সারা শরীরের ফুসকুড়ি দেখা দেওয়া, চোখের পেছনে ব্যথা হওয়া ইত্যাদি।

ডেঙ্গুর তীব্র মাত্রাকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় ‘ডেঙ্গু হেমোরেজিক’ বা ‘ডেঙ্গু শক সিনড্রোম’। এ সিনড্রোমের উপসর্গ হল, শ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধা হওয়া কিংবা শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বেড়ে যাওয়া, ত্বক শীতল হয়ে যাওয়া, অবিরাম অস্বস্তি, ত্বকের ভেতরের অংশে রক্তক্ষরণের কারণে ত্বকের উপরের অংশে লাল ছোপ সৃষ্টি হওয়া, বমি, মল কিংবা প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, প্রচণ্ড পেট ব্যথা ও অনবরত বমি হওয়া, নাক ও দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ এবং অবসাদ লাগা।