শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের পঞ্চবটি গ্রামে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভনের নেতৃত্বে দলের নেতা-কর্মীরা ধান কেটে দেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
করোনাভাইরাসের দেশ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় বিভিন্ন জেলায় বোরো ধান কাটার মজুরের সঙ্কট দেখা দেয়। এর মাঝে কৃষক লিটন মিয়া (৫০) জমির ধান কেটে দিলেন এ দলের নেতাকর্মীরা।
তিনি আরো বলেন,“আমার এক কানি জমি ছাত্রলীগে ১৬ জন নেতাকর্মী কেটে আমার বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে।”
এলাকায় এক কানি বলতে ৩০ শতাংশ জমিকে বোঝায়; যা এক বিঘার চেয়ে তিন শতাংশ কম।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল জানান, জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সারাদেশে অসহায় কৃষকের জমির ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসছে।
“আমরাও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় এ উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছি।”
আগাম বন্যার সম্ভাবনা থাকায় হাওর অঞ্চলে ধান কাটার মজুর সঙ্কট মোকাবেলায় বিভিন্ন জেলা থেকে মজুর পাঠানো হচ্ছে প্রশাসনের উদ্যোগে। এছাড়া ধান কাটার যন্ত্রপাতি দিয়েও সাহায্য করছে প্রশাসন।
তবে এ জেলায় ধান কাটার শ্রমিক সঙ্কট নেই বলছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রবিউল হক মজুমদার।
তিনি বলেন, “জেলার বাইরে থেকে অন্তত ১০ হাজার ধান কাটার শ্রমিক এসেছে। এছাড়া ৫৬টি হারভেষ্টার মেশিন দিয়ে প্রতিদিন ধান কাটা হচ্ছে।
অন্যদিকে, নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমা আশরাফী যুবকদের ধান কাটায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, “যারা ঘরে অলস সময় কাটাচ্ছেন তারা চাইলেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অসহায় কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে পারেন।
“আজকে ‘ফুলকারকান্দি সমাজ কল্যাণ যুব সংঘ’ যে কাজটি করেছে তা নাসিরনগরে উদাহরণ হয়ে থাকবে।”
হাওরবেষ্টিত নাসিরনগরে হারভেস্টার মেশিন না যেতে পারায় ধান কাটার শ্রমিকই একমাত্র ভরসা। এ হাওর অঞ্চলে প্রায় দুই লাখ ৩৯ হাজার বিঘায় বোরো ধান চাষ হয়েছে।
অনেকেই অর্থের অভাবে শ্রমিক দিয়ে ধান কাটতে পারছেন না বলে খবর পাওয়া গেছে।
নাসিরনগরে এমন তিনজন কৃষকের তিন কানি ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দেয় ‘ফুলকারকান্দি সমাজ কল্যাণ যুব সংঘ’ নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন; যার কথা ইউএনও উল্লেখ করেন।
ফুলকারকান্দি গ্রামের তিনজন কৃষক তাদের পাকা ধান কাটতে পারছে না বলে খবর পেয়ে ‘ফুলকারকান্দি সমাজ কল্যাণ যুব সংঘ’ সভাপতি মো. সাজ্জাদ হোসেন উদ্যোগ নেন।
তিনি বলেন, “আমরা ধান কেটে ওই কৃষকদের বাড়িতে পৌঁছে দেই। আমরা বিনা পারিশ্রমিকে তিনজন কৃষকের ধান কেটে দিয়েছি।
“দেশের এ ক্রান্তিকালে আমরা যুব সমাজ যদি এগিয়ে না আসি তাহলে কে দাঁড়াবে তাদের পাশে।”